বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: জাতীয় স্তরে বিজেপি (BJP) বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’তে পার্টির অবস্তান ঠিক করতে বৈঠকে বসছে সিপিএম (CPM) কেন্দ্রীয় কমিটি। আজ থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির তিনদিনের বৈঠক। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে রাখা হয়েছে। স্বভাবতই বৈঠকে ‘ইন্ডিয়া’ (INDIA Alliance) জোট প্রসঙ্গ আসবে বলে জানান কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য। তবে বাংলা ও কেরল নেতৃত্বের বক্তব্য বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে জানান তিনি। কারণ জোটে থাকার ফলে এই দুই রাজ্যে অস্বস্তিতে পড়েছে পার্টির রাজ্য নেতৃত্ব। রাজনৈতিকভাবে ফায়দা তুলবে বিজেপি। এহেন পরিস্থিতিতে জোটে থেকেও কীভাবে দূরত্ব রাখা তৈরি করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে পার্টি সূত্রে খবর।
গতবছর কেরলের কান্নুর পার্টি কংগ্রেসে জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে শামিল হওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাজ্যস্তরে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাজ্য নেতৃত্বের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জাতীয়স্তরের প্রভাব যে রাজ্যস্তরে পড়তে পারে একবছর আগের পার্টি কংগ্রেসে অনুমান করতে পারেননি কমরেডকুলের নেতারা। এখন বিজেপি বিরোধী জোট গঠন হতেই বিপাকে বাংলা ও কেরলের নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই দুই রাজ্যের নেতারা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনার দাবি জানিয়ে রেখেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘INDIA নয়, ওদের ডাকুন…’, বিরোধী জোটের নতুন নাম দিলেন মোদি]
তাঁদের ব্যাখ্যা, জোটের দু’টি বৈঠকেই দুই শীর্ষ বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও ডি রাজাকে মঞ্চ আলো করে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। সেখানে মধ্যমনি ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী লড়াই দিয়েছে গ্রামের কমরেডরা। কিন্তু তার পরেই শীর্ষনেতৃত্বকে জোটের মঞ্চে দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। ফলে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসক বিরোধী সমর্থন ফের বিজেপির ঝুলিতে চলে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবার কেরলে ক্ষমতায় রয়েছে পার্টি। মালয়ালি রাজ্যে কংগ্রেস বিরোধী সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের সমর্থন গেরুয়া শিবিরে পক্ষে যেমন যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে তেমনি বাম বিরোধী ভোট কংগ্রেসের ঝুলি থেকে গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে। ফলে ইন্ডিয়া জোটে পার্টির ভূমিকা কি হওয়া উচিৎ তা ঠিক করতেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে আলোচনা হবে বলে দিল্লির একেজি ভবন সূত্রে খবর।
পাটনায় জোটের প্রথম বৈঠকের পরেই বামনেতৃত্বের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিপিআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার। তাঁর প্রশ্ন ছিল, জাতীয়স্তরে চার বাম দল আলোচনায় না বসেই কীভাবে সিপিএম ও সিপিআইয়ের দুই শীর্ষনেতা বৈঠকে যোগ দিলেন। এর মাসুল বাংলায় বামেদের দিতে হবে বলে ইয়েচুরি ও ডি রাজাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। তারপরেই জোট নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করা শুরু করে বামেরা। বামেদের অন্দরে প্রশ্ন, আগে পার্টি নাকি জোট। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে নেতৃত্বকে।
[আরও পড়ুন: ‘শান্ত হোন, নাহলে বাড়িতে ইডি চলে যাবে’, সংসদে দাঁড়িয়েই ‘হুমকি’ মন্ত্রীর]