স্টাফ রিপোর্টার: বিধানসভায় শূন্য, অথচ পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) বিজেপির সঙ্গে জোট! রাম-বাম জোট নিয়ে কটাক্ষ শুরু হয়েছিল আগেই। এখন পাড়ায় পাড়ায় ‘বিজেপির দালাল’ বলেও খোঁচা খাচ্ছেন ‘কমরেড’রা। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগরে আলিমুদ্দিনে (Alimuddin) তোপ দাগলেন দলের কমরেডরা। সূত্রের খবর, গত শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে জেলার বেশ কিছু পরিচিত মুখও ছিল। ঘটনার ফলে অস্বস্তিতে পড়ে প্রথমে সদর দপ্তরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয়। ফলে ক্ষুব্ধদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজ্য দপ্তরে ডেকে নেওয়া হয় তাঁদের কথা শুনে পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য। তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে খবর।
দলের কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূলের (TMC) অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে খোলাখুলি বিজেপির (BJP) দালালি শুরু করেছে নেতৃত্ব। এতে দলেরই ক্ষতি। নিচুতলার কমরেডরা পড়ায় যে কারণে মুখ দেখাতে পারছেন না। আর এই বিজেপি-সিপিএম জোট যে খোলাখুলিই হয়েছে, তার বড় প্রমাণ গ্রামে গ্রামে একের পর নির্দল প্রার্থীর নামে যৌথ সমর্থনের পোস্টার। ফলে নেতৃত্বের অস্বীকার করার জায়গা নেই। যাঁরা এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা আবার দলের নির্ভরযোগ্য কর্মী। ফলে দলের এই হীন অবস্থায় তাঁদের আপত্তি, বিক্ষোভ স্রেফ উড়িয়ে দেওয়াও যায় না। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে বেকায়দায় আলিমুদ্দিন (Alimuddin)।
[আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচনে জোড়া মৃত্যু, পাট খেত থেকে উদ্ধার BJP কর্মীর দেহ, প্রাণহানি CPM প্রার্থীর শ্বশুরেরও]
সূত্রের খবর, এভাবে রাজ্য দপ্তর অবরোধের মধ্যে ‘বিজেপির দালালি মানছি না’ বলে স্লোগানও তোলেন কমরেডরা। তাঁদের মূল টার্গেট ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বিক্ষোভ! কয়েক শ্রেণির কমরেডরা গিয়েছিলেন। বলছেন, ‘আমাদের পার্টি বিজেপির দালালি করছে। এই দালালি মানি না।’ তারপর পার্টির গেট বন্ধ করে ৪ জনকে ডেকে নিয়ে ভিতরে মিটিং করতে হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: পাঁচশো-হাজার ‘ঘুষে’ই মেট্রোর লাখো টাকার লোহা-তামা চুরি! গ্রেপ্তার ৩ নিরাপত্তারক্ষী]
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর, কমরেডরা নিজেদের একাধিক দাবি জানিয়ে এসেছেন। ২০১১-য় হারের জ্বালা ভুলতে না পেরে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। পার্টি বেলাইন হয়ে গিয়েছে। মূল শত্রু বিজেপি। কিন্তু উলটোপথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ার ফলে ভোট বাড়ছে বিজেপির। দলে ক্ষোভ বাড়ছে। মুখে বলা হচ্ছে, তৃণমূল আর বিজেপি দুই-ই শত্রু। কিন্তু প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থনের ছবি আসছে। দলের কর্মীরা ধন্দে। দলকে এভাবে বিজেপির দালালি করা বন্ধ করতে হবে। নেতৃত্ব এ নিয়ে মুখে একেবারে কুলুপ।