বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সেই গতানুগতিক ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ অবস্থান সিপিএমের! বঙ্গ সিপিএমের দাবিতেই সিলমোহর পলিটব্যুরোর। ‘ইন্ডিয়া’ জোটে (INDIA Alliance) থাকলেও তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব রাখতে সমন্বয় কমিটিতে প্রতিনিধি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত পার্টি সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির। তবে সংবিধান রক্ষার স্বার্থে ইন্ডিয়া জোটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটরা।
বাংলার স্বার্থে ইন্ডিয়া জোট থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে এবং কোনওভাবেই তৃণমূলের (TMC) ‘ছোঁয়া’ পার্টির গায়ে লাগতে দেওয়া যাবে না-বঙ্গ কমরেডকুলের শীর্ষ নেতাদের এহেন দাবিকে নতমস্তকে মেনে নিল সিপিএম (CPM) শীর্ষনেতৃত্ব। শনি ও রবিবার পার্টির দুদিনের পলিটব্যুরোর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ইন্ডিয়া জোটে শরিক সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগ নেবে পার্টি নেতৃত্ব। ইন্ডিয়া জোটের তিনটি সভায় সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে চলছিলেন তাতে ক্ষুব্ধ হয় বঙ্গ সিপিএম নেতৃত্ব। পার্টির শীর্ষনেতৃত্বের ভূমিকা কর্মীদের মনোবলে আঘাত লেগেছে। এভাবে চললে ভবিষ্যতে তার ফল ভুগতে হবে।
[আরও পড়ুন: বার্সেলোনায় প্রবাসী ভারতীয় সম্মেলনে দেশের নেত্রী মমতা]
গত কয়েক বছর যাবত তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে কর্মীরা। তাঁদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলার দাবি জানায় বঙ্গ নেতৃত্ব। সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের নাছোড় আবদারকে গুরুত্ব দিতে ইন্ডিয়া জোটের যেসব কমিটিতে তৃণমূলের সদস্য থাকবে সেই কমিটিতে সিপিএম অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল পলিটব্যুরো। তবে পার্টির তরফে সাফ জানান হয়েছে, দেশের সংবিধান আক্রান্ত। দেশের নাম বদলের পাশাপাশি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মতো ‘অসাংবিধানিক’ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মোদি সরকার।
নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বহীন করার পাশাপাশি কমিশনের শীর্ষপদে নিজেদের লোক বসাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় ইন্ডিয়া জোটে পার্টি দূরত্ব বাড়ালে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। মানুষের কাছে পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকবে। তাই জোটে পার্টি অগ্রণী ভূমিকাই পালন করবে। আরও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সংগঠিত করার কাজে জোর দেওয়া হবে। জোট নেতৃত্বের পাশাপাশি পার্টি এককভাবে এই প্রয়াস চালাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।