সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেলবোর্নে ধরাশায়ী ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বর্ডার গাভাসকর ট্রফি জয়ের স্বপ্নও শেষ। বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দৌড় থেকেও। বক্সিং ডে টেস্টে হেরে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে গেলেন রোহিতরা। বাকি আরও একটি টেস্ট। সিডনিতে নামার আগে কোচ গৌতম গম্ভীরের কাছে প্রশ্ন অনেক। উত্তর এখনও অধরাই।
রোহিত-বিরাটের ব্যর্থতা: বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে চূড়ান্ত ব্যর্থ ভারত অধিনায়ক। একই অবস্থা বিরাট কোহলিরও। এদিন প্রথমজন আউট হলেন ৯ রানে। দ্বিতীয়জন ৫ রানে। একটি সেঞ্চুরি ছাড়া কোহলির ফর্ম বলার মতো নয়। আর রোহিত ওপেনে হোক বা ছয় নম্বরে, অফ ফর্মের ধারা বজায় রেখেছেন। অথচ বিরাট লক্ষ্য তাড়া করার জন্য তাঁদের মতো বর্ষীয়ানদেরই পথ দেখানো উচিত ছিল।
বোলিং বিভাগের সমস্যা: মেলবোর্নের অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের সময় আশা জাগিয়েছিল ভারতীয় বোলিং। ১০০ রানের মধ্যে অজিদের ৬ উইকেট ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু তারপর সেই রানটা গিয়ে থামল ২৩৪-এ। শেষ উইকেটের জুটিতে উঠল ৬০ রানের বেশি। বুমরাহ-সিরাজরা উইকেট তুললেও এই অতিরিক্ত রান আরও চাপে ফেলে ভারতকে।
চাপের মুখে ধরাশায়ী ব্যাটিং: গোটা সিরিজ জুড়েই আশাভরসা জাগাতে ব্যর্থ ভারতীয় ব্যাটিং। কেএল রাহুল আগের ম্যাচগুলোতে ভালো খেললেও এমসিজি-তে ব্যর্থ। রানের দেখা নেই পন্থের ব্যাট থেকে। কোনও ব্যাটারই ধারাবাহিক নন। উলটো দিকে সাহায্য না পেয়ে যশস্বীর লড়াইও ব্যর্থ হল। যেখানে ভারতীয় দলের মোট রান ১৫৫, সেখানে যশস্বীর একারই ৮৪।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত: যশস্বী জয়সওয়ালের বিতর্কিত আউটটাই কি ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট? তিনি যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, ততক্ষণ ভরসা ছিল ম্যাচ ড্র করে দিতে পারবেন। কিন্তু প্যাট কামিন্সের বাউন্সার চালিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটার। তা মিস করলে চলে যায় উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাচের আবেদন জানান কামিন্স। স্নিকোমিটারে বারবার করে দেখেও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারপর বল ট্র্যাকিংও করেন বাংলাদেশি থার্ড আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকত। সেখানে তাঁর মনে হয় বল যশস্বীর ব্যাটে লেগে দিক বদল করেছে। আউট দিয়ে দেন তিনি।
ক্যাচ ফেলার বদভ্যাস: ক্যাচই ম্যাচ জেতায়। মেলবোর্নে চতুর্থ দিন নামার আগে সেটা বোধহয় ভুলেই গিয়েছিল ভারত। বিশেষ করে যশস্বী জয়সওয়াল। তিনি একাই ফেললেন তিনটি ক্যাচ। মহম্মদ সিরাজও ফলো থ্রুতে একটি ক্যাচ ছাড়েন। সঠিক সময়ে এই ক্যাচগুলো ধরে নিতে পারলে হয়তো ফলাফল অন্যরকম হত।
দিশাহীন নেতৃত্ব: রোহিত শর্মার অধিনায়কত্ব নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। বিশেষ করে, যে দলটা বুমরাহর নেতৃত্বে পারথে দুরন্ত জয় পেল, সেই দল কীভাবে পরের টেস্টগুলোতে এত দিশাহীন দেখায়। উলটো দিকে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স উইকেট তুলছেন, রান করছেন। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে ক্রমশ চাপ বাড়ছে গম্ভীরের উপরেও।