স্টাফ রিপোর্টার: দু'বছর ধরে বাড়ছে না ম্যাচ ফি। এর আগে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, প্রত্যেক বছরই আম্পায়ারদের ম্যাচ ফি দশ শতাংশ করে বাড়ানো হবে। গত দু'বছর সেটা হয়নি। যার ফলে ক্ষোভ বাড়ছে আম্পায়ারদের মধ্যে। শুধু তাই নয়, এবার থেকে মাঠে স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার তুলে দেওয়ার ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন সিএবি কর্তা। সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দেশের বাইরে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি লিগে প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালসের কোচ। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন। সিএবির যুগ্ম সচিব মদনমোহন ঘোষ নাকি ময়দানী ক্রিকেট থেকে স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
খবর নিয়ে যা জানা গেল, সিএবি নাকি এখন বেশ কয়েকটা জায়গায় খরচ বাঁচাতে চাইছে। ঠিক সে জন্যই স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার তুলে দেওয়ার ভাবনা। সিএবি-র স্থানীয় ক্রিকেটে দু'জন ফিল্ড আম্পায়ারের সঙ্গে একজন স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার রাখা হয়। ফিল্ড আম্পায়াররা যদি কখনও অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা তাঁদের কোনও সমস্যা হলে যাতে স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার পরিবর্ত হিসাবে কাজ করে দিতে পারেন।
শোনা গেল, সিএবির যুগ্ম সচিব স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি হল, যেহেতু এখন কোনও ম্যাচেই স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ারদের দরকার পড়ছে না, তাহলে শুধু শুধু তাঁদের রেখে লাভ কী। বরং খরচ কমানো উচিত। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যদি কোনও আম্পায়ারের মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা কোনও সমস্যা হয়, তখন কী হবে? মাঠে নতুন করে আম্পায়ার পাঠাতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লেগে যাবে। তখন ব্যাটিং টিমের কাউকে লেগ আম্পায়ারের কাজ করতে হবে! সেখানে কি নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে? সিএবি কর্তার প্রস্তাব শোনার পর থেকেই তুমুল সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বলাবলি চলছে, এরকম পাড়া ক্রিকেটে হয়। সিএবির লিগে স্ট্যান্ড বাই আম্পায়ার থাকবে না, সেটা ভাবাই যায় না। খরচ কমানোর হাজার একটা উপায় রয়েছে। সেখানে ক্রিকেটের সঙ্গে আপোস করা হবে কেন? এটাও বলা হচ্ছে, সৌরভ শহরে না থাকলে কি দু'একজন কর্তা যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন?
এখানে শেষ নয়। আরও আছে। গত দু'বছর ধরে আম্পায়ারদের ম্যাচ ফি বাড়েনি। শোনা গেল, আগে ঠিক হয়েছিল, প্রত্যেক বছর আম্পায়ারদের দশ শতাংশ করে ম্যাচ ফি বাড়ানো হবে। গত দু'বছর ধরে সেটা হয়নি। যার ফলে দক্ষ আম্পায়ারদের অনেকে ম্যাচ করার আগ্রহ হারাচ্ছেন। বর্তমানে যাঁরা সিএবির গ্রেড ওয়ান আম্পায়ার, তাঁরা সুপার ডিভিশনের ম্যাচে আম্পায়ারিং করলে প্রত্যেক দিন তিন হাজার টাকা করে ম্যাচ ফি পান। 'এ' গ্রেডের কোনও আম্পায়ার আবার যদি প্রথম ডিভিশনের 'বি' আর 'সি' গ্রুপের ম্যাচ পরিচালনা করেন, তার প্রত্যেক দিনের ম্যাচ ফি ২৪২০ টাকা। গ্রেড টু'য়ের আম্পায়াররা পান ১৮০০। 'সি' আর 'ডি' গ্রুপের ক্ষেত্রে মেলে যথাক্রমে ১২০০ ও ১১০০ টাকা। সিএবিতে অনেক আম্পায়ার রয়েছেন, যাঁরা সরকারি চাকরি করেন। তাঁরা ওই ম্যাচ ফি-র জন্য অফিস ছুটি নিতে রাজি নন। যার ফলে ভুগছে ক্রিকেট। সিএবি লিগে এখন দক্ষ আম্পায়ারদের সংখ্যা অনেকটাই কমছে।
অতএব কী দাঁড়াল? খরচ বাঁচানোর পরিকল্পনায় 'আক্রান্ত' হতে হচ্ছে স্থানীয় ক্রিকেটকে। সিএবির কাছে কি তা লজ্জার বিজ্ঞাপন নয়?
