রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: ভারতীয় বোর্ডে সচিবের চেয়ারে জয় শাহ-র উত্তরসূরি কে? কার্যনির্বাহী সচিব হিসেবে শনিবার যাঁকে চিঠি ধরালেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট রজার বিনি, সেই বর্তমান বোর্ড যুগ্ম সচিব দেবজিৎ সইকিয়াই কি সচিবের দায়-দায়িত্ব পাকাপাকি ভাবে সামলাবেন আগামী বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত? যত দিন না বোর্ড বার্ষিক সভা হচ্ছে?
উত্তর- ধোঁয়াশা পরিপূর্ণ এবং অস্পষ্ট!
শনিবার রাতে বর্তমান বোর্ড যুগ্ম সচিব দেবজিৎ সইকিয়াকে চিঠি দিয়ে বোর্ড প্রধান রজার বিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, আপাতত তাঁকেই সচিবের কাজকর্ম দেখতে হবে। যত দিন না নতুন সচিব আসছেন। কিন্তু দেবজিতের নতুন দায়িত্ব প্রাপ্তির পরেও বোর্ড মহলের একটা অংশ নিশ্চিত হতে পারছে না যে, সচিব-নাটকের যবনিকা পতন এখানেই হয়ে গেল! দেবজিতই যে আগামী বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সচিবের কাজকর্ম দেখবেন, সে রকম খবর বোর্ড কর্তাদের কারও কারও কাছে এখনও সুস্পষ্ট ভাবে নেই। অবশ্যই এটা তাঁরা মানছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে দেবজিতের দায়িত্ব বেড়েছে। তিনি জয় শাহ-র জায়গায় আইসিসির বোর্ড অফ ডিরেক্টর'স বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব যেমন করছেন, তেমনই কার্যনির্বাহী সচিবের দায়িত্বও তাঁকেই পালন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা যে আগামী বোর্ড বার্ষিক সভা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হবে, তেমন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না সে ভাবে কেউ। কারণ একটাই- স্পষ্ট কোনও খবর এখনও নেই।
আসলে গত ১ ডিসেম্বর থেকে আইসিসি চেয়ারম্যান হয়ে গিয়েছেন জয় শাহ। ভারতীয় বোর্ড সচিবের পদ থেকে সরে গিয়ে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ পূর্ণ না করে। যার ফলে দশ মাসের একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আবার মুশকিল হল, যিনিই নতুন সচিব হয়ে আসুন না কেন, তাঁকে আগামী সেপ্টেম্বরে পুনরায় নির্বাচিত হতে হবে। মাঝে একটা সময় শোনা গিয়েছিল, সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে সচিব হওয়ার প্রস্তাব গিয়েছে। ঠিক যেমন ভাবে রোহন জেটলি থেকে গুজরাটের অনিল প্যাটেলের নাম ভেসে উঠেছিল। কিন্তু সে দোলাচল আপাতত শান্ত হল যুগ্মসচিবকেই বোর্ড সচিবের কাজ সাময়িক দেখতে বলায়। সমস্যা এখানেও একটা আছে। সেটা হল, বোর্ড গঠনতন্ত্রের নিয়ম বলে, যে কোনও পদাধিকারীর শূন্যস্থান পঁয়তাল্লিশ দিনের মধ্যে পূর্ণ করতে হবে। অর্থাৎ, নিয়ম ধরলে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সচিব বেছে নিতে হবে বোর্ডকে। তা সে যতই নতুন সচিবকে আগামী সেপ্টেম্বরে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে আসতে হোক। এখন প্রশ্ন হল, দেবজিৎ সইকিয়া কি ১৫ জানুয়ারির পরেও কার্যনির্বাহী সচিব থাকবেন? নাকি তখন নতুন স্থায়ী সচিব বেছে নিতে হবে বোর্ডকে? বোর্ড মহলের অনেকের সমস্ত গতিপ্রকৃতি নিয়ে যা ধারণা, তা আদতে রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতো।
সচিব নাটক শেষ হইয়াও হইল না শেষ!
