সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবন কীভাবে বদলে যায়! ডবল সেঞ্চুরি করার পর অনেকেই মনে করেছিলেন, ভারতীয় দলে ঈশান কিষানের জায়গা পাকা। কিন্তু তারপর গঙ্গায় অনেক জল বয়ে গিয়েছে। বিসিসিআই চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন। ক্রমশ জাতীয় দলের লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছেন। আবার কামব্যাকের লড়াইও করেছেন। অবশেষে সেঞ্চুরিতে ঝাড়খণ্ডকে সৈয়দ মুস্তাক আলি চ্যাম্পিয়ন করে নির্বাচকদের বার্তা দিয়ে রাখলেন। যার নেপথ্যে রয়েছে ভগবদ্গীতার বাণী। আর ঈশানের এই উত্থান-পতনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ডিসেম্বর মাস।
কীভাবে? ফিরে দেখা যাক ঈশানের জীবনের গত চার বছরের ডিসেম্বর মাসগুলোর ইতিহাস। ২০২২-র ডিসেম্বর মাসে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ডবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। ক্রিস গেইলের রেকর্ড ভেঙে ১২৬ বলে ডবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর ২০২৩। 'মানসিক ক্লান্তি'র জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। মনে করা হয়, নিয়মিত সুযোগ না পেয়ে তিনি সাময়িক সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। যদিও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। ঘটনা প্রবাহের জেরে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন।
সেই একটা বছর প্রবল যন্ত্রণায় কেটেছে ঈশানের। অবশেষে ২০২৪-র ডিসেম্বরের কোনও একদিন ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে চোখে পড়ে গীতার একটি শ্লোক। বাবা প্রণব পাণ্ডের কাছে সেই শ্লোকের অর্থ জানার পর ক্রমশ আকৃষ্ট হন ভগবদ্গীতার প্রতি। তারপর থেকে ব্যাট, ক্লিপিং গ্লাভস ছাড়া গীতা হয়ে ওঠে তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী। পবিত্র গ্রন্থের বাণীই তাঁকে লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা জোগায়।
এবার ২০২৫-র ডিসেম্বর। সৈয়দ মুস্তাক আলিতে ৫১৭ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট প্রায় ২০০। ফাইনালে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ৫১ বলের সেঞ্চুরিতে ঝাড়খণ্ডকে প্রথম জাতীয় স্তরের টি-টোয়েন্টি খেতাব জিততে সাহায্য করেছেন। মাঝে ডিওয়াই পাটিল টুর্নামেন্ট, বুচি বাবু টুর্নামেন্ট, আইপিএল, কাউন্টি ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলেছেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টের ঋষভ পন্থ চোট পাওয়ায় একটা সুযোগ এসে গিয়েছিল। কিন্তু ঠিক তখনই চোট পান। শেষ পর্যন্ত যেন জাতীয় দলের লড়াইয়ে ফিরছেন। মুস্তাক আলিতে যাওয়ার আগে বাবাকে গীতার শ্লোকের মাধ্যমে বলেছিলেন, শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়াই জীবনের সবচেয়ে আনন্দ। 'অবাধ্য' ঈশান শৃঙ্খলা দিয়েই জাতীয় দলে ফিরতে তৎপর।
