ভারত: ৩৪৯/৮ (বিরাট কোহলি ১৩৫, রাহুল ৬০, বার্গার ৬৫/২)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৩২/১০ (ম্যাথু ব্রিটজকে ৭২, মার্কো জানসেন ৭০, কুলদীপ ৬৮/৪)
ভারত ১৭ রানে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেস্ট সিরিজে চুনকামের লজ্জা। ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচিত। আক্ষরিক অর্থেই যেন 'গম্ভীর' গৌতম। এই পরিস্থিতিতে টিম ইন্ডিয়ার 'উদ্ধারকর্তা' কে? সেই বহুপরিচিত দু'টি মুখ। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে যে একটি মাত্র ম্যাচে ভারত জিতেছিল, সেখানে রোহিত সেঞ্চুরি ও কোহলি হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে শুধু সেই পরিসংখ্যানটা অদলবদল হয়ে গেল। রাঁচিতে কোহলির ব্যাট থেকে এল সেঞ্চুরি, রোহিত করলেন হাফসেঞ্চুরি। প্রোটিয়াদের হয়ে মার্কো জানসেন ও করবিন বশ পালটা লড়াই দিয়ে একটা চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই। তবে ৩৫০ রানের বিরাট লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি। বরং ভারতের বোলিংয়ে নজর কাড়লেন 'সমালোচিত' হর্ষিত রানা। জানসেনের তাণ্ডব থামিয়ে ভারত জিতল ১৭ রানে।
রবিবার টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক আইডেন মার্করাম। প্রায় ১০ মাস পর ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে তুলতে পারলেন না যশস্বী জয়সওয়াল (১৮)। এরপর নামলেন বিরাট। রোহিতের সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠল ১৩৬ রান। রোহিত জানসেনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫৭ রানে সাজঘরে ফিরলেন। তবে রান পেলেন না রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ওয়াশিংটন সুন্দর। পরপর উইকেট পড়ায় রানের গতিও অনেকটা কমে যায়। যদিও চাপ সামলে জানসেনের বলে চার মেরে সেঞ্চুরি পূরণ করলেন বিরাট। ওয়ানডে’তে ৫২তম সেঞ্চুরির পর চেনা ভঙ্গিতে সেলিব্রেশনে মেতে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত ১২০ বলে ১৩৫ রানে আউট হন। ইনিংসে ছিল ১১টি চার, ৭টি ছক্কা। বহুদিন পর নেতৃত্ব ফিরে পেয়ে ৬০ রানের ইনিংস উপহার দিলেন কেএল রাহুল। ২০ বলে ৩২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩৫০ রানের লক্ষ্য রাখে ভারত।
পাহাড়প্রমাণ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই হোঁচট খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বলা ভালো, হর্ষিত রানা প্রোটিয়া ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়লেন। রানের চাপ তো ছিলই। কিন্তু হর্ষিত যেভাবে বলের সিম ব্যবহার করে পরপর উইকেট পেলেন, তা গৌতম গম্ভীরের মুখেও হাসি ফোটাবে। তাঁর সামনে রায়ান রিকেলটন ও কুইন্টন ডি'কক রানের খাতা খুলতে পারলেন না। মার্করামকে আউট করে সঙ্গ দিলেন অর্শদীপ সিংও। যার সৌজন্যে ১১ রানে ৩ উইকেট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার।
ম্যাচ নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার অবস্থা থেকে লড়াই শুরু করেন ম্যাথু ব্রিটজকে। টোনি ডি'জর্জি বা ডেওয়াল্ড ব্রেভিসরা অল্পবিস্তর চেষ্টা করলেও ভারতকে চাপে ফেলেন মার্কো জানসেন। টেস্ট সিরিজে তিনি খেলেছিলেন টেস্টের মতো করে। আর ওয়ানডেতে খেললেন টি-টোয়েন্টির মতো। ৩৯ বলে ৭০ রানের ইনিংস আরও খানিকক্ষণ চললে ভারতের বিপদ বাড়ত। উচ্চতার সুযোগ নিয়ে যেখানেই বল পড়ছিল, সবাই বাউন্ডারির বাইরে পাঠাচ্ছিলেন। ৮টি চারের পাশে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩টি ছয়। শেষ পর্যন্ত কুলদীপের বলে ঝুঁকি নিতে গিয়ে জাদেজার হাতে ক্যাচ দেন। ওই একই ওভারে কুলদীপ ফেরান ব্রিটজকেও। ম্যাচ কার্যত ওখানেই ভারতের দিকে চলে আসে। তবে করবিন বশ (৬৭) শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান। তাঁর হাতে 'বশ' হতে হতে বাঁচল টিম ইন্ডিয়া।
অধিনায়ক হিসেবে রাহুল ম্যাচ জিতলেন ঠিকই, তবে রোহিত শর্মাকেও বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিতে দেখা গেল। আর যে ওভারে কুলদীপ ২ উইকেট নেন, তার আগের ওভারেই হর্ষিত মাত্র ৪ রান দেন। ফলে টেস্টের 'গ্রোভেল' অবস্থা থেকে কামব্যাকের শুরুটা ভালোই হল টিম ইন্ডিয়ার জন্য। তবে পরের ম্যাচগুলোতে শ্রেয়স আইয়ার-হীন মিডল অর্ডার ও বুমরাহ-সিরাজকে ছাড়া বোলিং বিভাগের সমস্যাগুলো না কাটাতে পারলে সমস্যা হতেই পারে।
