সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই লর্ডসে খেলা স্বপ্ন থাকে। বহু স্মরণীয় ম্যাচের সাক্ষী এই মাঠে তৃতীয় টেস্ট মুখোমুখি হয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড। যদিও তার আগে এখানকার 'স্লোপ' অর্থাৎ ঢাল নিয়ে চর্চা অব্যাহত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রিকেট মাঠে এই ধরনের ঢাল থাকা কোনও সাধারণ ব্যাপার নয়। বিশেষ করে আধুনিক সময়ে। ঘটনাচক্রে এই সময়ে যে কোনও মাঠে কোনও খুঁত থাকলে তা উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে সহজেই মেরামত করা হয়। কিন্তু লর্ডসে অনেককিছু সংস্কার হলেও এই ঢাল কিন্তু ঐতিহ্যশালী মাঠটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই কারণে ব্যাটার এবং বোলারদের কাছে বিষয়টা সমস্যার হতে পারে।
এই 'ঢাল' আসলে লর্ডসের মাঠের উপর দিয়ে একটি তির্যক গ্রেডিয়েন্ট। যা উত্তর-পশ্চিম (প্যাভিলিয়ন এন্ড) থেকে দক্ষিণ-পূর্ব (নার্সারি এন্ড) পর্যন্ত বিস্তৃত। মাটির উপর থেকে এই ঢাল প্রায় ২.৫ মিটার (৮ ফুট ২ ইঞ্চি)। যদিও ক্রিকেট মাঠে এমন ঢাল থাকা স্বাভাবিক নয়। লর্ডস তৈরি হয়েছিল ১৮১৪ সালে। ইংল্যান্ডের সেন্ট জনস উড এলাকায় রয়েছে লর্ডস। যা প্রাকৃতিকভাবেই ঢালু। অর্থাৎ শুরু থেকেই এই 'আইকনিক ভেন্যু'তে ঢাল বর্তমান। পরবর্তীকালে এই ঢালু অংশ সমতল করার দাবি উঠলেও ঐতিহ্যের কথা ভেবে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন বোলার এবং মিডলসেক্সের ক্রিকেটার অ্যাঙ্গাস ফ্রেজার 'দ্য অ্যাথলেটিক' ওয়েবসাইটে বলেন, "নতুন কোনও ক্রিকেট স্টেডিয়াম এমন ঢাল দেখতে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এখানে এই ঢাল দেখা যায়। কারণ হাজার হাজার বছর ধরে এটাই এখানকার জমির প্রকৃতি। হ্যাম্পস্টেড হিথ (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩৯ মিটার/৪৫৬ ফুট উঁচুতে অবস্থিত) এলাকা থেকে শুরু হয়ে এটা টেমস নদীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। এটা বেশ অনন্য। অন্যান্য বেশিরভাগ দেশের মাঠগুলি নতুন এবং বেশ সমতল। যদিও লিডস এবং নটিংহ্যামেও ঢাল রয়েছে। কিন্তু লর্ডসের মতো কোথাও নেই।"
এই মাঠের এমন অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য যে, প্যাভিলিয়ন প্রান্ত থেকে কোনও বোলার বল করতে এলে তাঁর মনে হতে পারে ঢালুর দিকে নেমে যাচ্ছেন। এই ঢালে ডানহাতি বোলাররা ইনসুইং এবং বাঁ-হাতি বোলাররা আউটসুইংয়ের সুবিধা পেতে পারেন। এতে ব্যাটাররা পড়তে পারেন অসুবিধার মধ্যে। তাই এখানে ব্যাট করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। এখানকার উইকেটে তাই ঠিকমতো টেকনিক বজায় রেখে ব্যাটিং করতে হয়। নাহলে সমূহ বিপদ।
