সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গর্জে উঠেছিল বাংলাদেশের পড়ুয়ারা। ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের নানা প্রান্ত। হিংসাত্মক আন্দোলনের পরে কোটা সংস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ। মুক্তিযোদ্ধা সংরক্ষণ ৩০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ শতাংশ। যদিও এর পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় রাজধানী ঢাকা-সহ গোটা দেশে। তবে এই অচলাবস্থা কাটাতে কড়া পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কার্ফু জারি থাকবে আরও দুদিন।
স্বাভাবিকভাবেই এই আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় প্রভাব পড়েছে। শিল্প-কারখানাগুলো সরকারি নির্দেশে বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় সোমবার বাংলাদেশের রপ্তানিকারী ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে। তারা অনুরোধ জানায় দ্রুত কার্ফু তুলে নিতে ও ইন্টারনেট পরিষেবা সচল করে দেওয়ার জন্য। তবে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে কার্ফু-র মেয়াদ আরও দুদিন বেড়েছে। আগামীকাল বুধবার এবং বৃহস্পতিবারও কার্ফু বহাল থাকবে এবং এই দুদিন অফিস খোলা থাকবে। তবে নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
[আরও পড়ুন: ‘ছাত্রদের ঢাল করে দেশের ক্ষতি করছে বিরোধীরা’, আন্দোলন রুখতে কী পদক্ষেপ? জানালেন হাসিনা]
এদিকে, মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই সীমিত আকারে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক, ইউটিউব-সহ সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী পলক। এদিন বিকালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটই চালু হবে। আপাতত ঢাকা ও চট্টগ্রামে এই পরিষেবা চালু হবে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে হাসিনা জানিয়েছেন, “আমরা পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত করে এনেছি। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে এবং কার্ফু শিথিল করাও হচ্ছে।” পাশাপাশি বিরোধীদের নিশানা করে বলেছেন, ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বিরোধীরা দেশের ক্ষতি করছে। দেশের ভাবমূর্তি ফেরানো এবং শান্তি ফিরিয়ে আনাই এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য। ঢাকা-সহ দেশের একটা বড় অংশ এখনও বন্ধ। ঢাকার মধ্যে কোনও ট্রেন চলাচল করছে না। স্কুল, কলেজে আসতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনা।