সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রায় ৩০ মাস ধরে বন্ধ বাংলাদেশের (Bangladesh) দর্শনা সীমান্তের শুল্ক স্টেশন। ফলে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াত করতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। দীর্ঘদিন ধরে বারবার ঘুরপথে, অন্যান্য স্থল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াতের বাধ্য হচ্ছেন। এবার তা নিয়ে সরব হলেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। দ্রুত শুল্ক স্টেশন খুলে যাতায়াত আগের মতো স্বাভাবিক করার দাবিতে রবিবার স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা প্রায় ৩০ মাস চুয়াডাঙার দর্শনা শুল্ক স্টেশন (দর্শনা-গেদে) হয়ে স্থলপথে ভারতে (India) যাতায়াত করতে পারছেন না। যদিও ভারতীয় পাসপোর্টধারীরা স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছেন। এ ছাড়া ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রী চলাচলও রয়েছে স্বাভাবিক।
[আরও পডুন: সব বড় বিজ্ঞাপন নেতা-মন্ত্রীদের পুজোয়! জোর চর্চা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের সংগঠনের পুজোসংখ্যায়]
দর্শনা সীমান্ত থেকে কলকাতার (Kolkata) দূরত্ব ১১৮ কিলোমিটার। এই সীমান্ত পার হয়ে পশ্চিবঙ্গের গেদে রেল স্টেশন থেকে মাত্র ৩০ টাকায় তিন ঘণ্টায় কলকাতার শিয়ালদহে পৌঁছনো যায়। দূরত্ব, সময় ও খরচ কম হওয়ায় চুয়াডাঙা-সহ খুলনা, ঢাকা ও রাজশাহীর অন্তত ১৫ জেলার মানুষের দর্শনা-গেদে পথে যাতায়াতে সুবিধা হয়।
দর্শনা-গেদে রেলপথে মৈত্রী এক্সপ্রেসে বাংলাদেশি যাত্রীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভিসা (Visa) পেতে কোনও সমস্যা নেই। অথচ স্থলপথে চলাচল করতে পারছেন না। শুধু ৬৫ বছরের বেশি বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকদের স্থলপথে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের বেনাপোল সীমান্ত, আকাশপথ ও রেলপথে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সময় ও ভোগান্তির সঙ্গে খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ। অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিকরা কিন্তু আগের মতো স্বাভাবিকভাবেই দর্শনা-গেদে স্থলপথে চলাচল করছেন। এক সীমান্তে দু’দেশের জন্য দুই নীতি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
[আরও পডুন: ‘মোটা’, ‘তোতলা’ বলে লাগাতার কটাক্ষ, বাবা স্কুলে অভিযোগ জানাতে যেতেই সহপাঠীদের হাতে খুন ছাত্র]
চিকিৎসা ও ভ্রমণ-সহ জরুরি প্রয়োজনে বাংলাদেশি যাত্রীরা ভিসা অনুযায়ী বেনাপোল স্থলবন্দর, ঢাকা বিমানবন্দর এবং ঢাকা অথবা খুলনা থেকে রেলপথে যাতায়াত করছেন। এতে সময় ও অর্থের অপচয়-সহ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাঁদের। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন বাংলাদেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ২৫০০ থেকে ৩০০০ যাত্রী চলাচল করতেন; সেখানে বর্তমানে বাংলাদেশি জ্যেষ্ঠ নাগরিক ২০ থেকে ৩০ জন এবং ভারতীয় নাগরিক ১৫০ থেকে ১৬০ জন চলাচল করছেন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুল্ক স্টেশনকে কেন্দ্র করে স্থাপিত দোকান, হোটেল-রেস্তরাঁ বন্ধ হওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। চুয়াডাঙা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়ে সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।