সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সময় যত গড়াচ্ছে, শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশ ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'। সামাল দিতে তৎপর প্রশাসন। অন্তঃসত্ত্বাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। সাগর ব্লকের ৯৮ জন অন্তঃসত্ত্বাকে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরিয়ে সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বাঙ্গুর ও বারুইপুর জেলা হাসপাতালেও বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সরকারি হিসেবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ১ হাজার ২২৪ জন প্রসূতি রয়েছেন। তাঁদের তথ্য সংগ্রহ করে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন আশাকর্মীরা।
৩৩ জন ডাক্তারের দল রওনা দিয়েছে সুন্দরবনে। যথেষ্ট ওষুধ, পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব হেলথ সেন্টারেই থাকছে জেনারেটার। বুধবার থেকেই ২২টি অ্যাম্বুল্যান্স ক্যানিং হাসপাতালে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সুন্দরবন কোস্টাল থানায় ৪টি বোট অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে অতিরিক্ত ৬০টি শয্যা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এছাড়াও, সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা, মুড়িগঙ্গা, গঙ্গাসাগর, ধবলাট-সহ দ্বীপের বহু জায়গা থেকে প্রায় নয় হাজার বাসিন্দাকে নিকটবর্তী স্কুল বাড়ি ও ফ্লাডশেল্টারে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এদিকে, নিরাপত্তার জন্য বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জ ও মৌসুনির হোটেল ও হোমস্টেগুলি পর্যটক শূন্য করে দেওয়া হয়েছে। নামখানার বিডিও অমিতকুমার সাউ জানিয়েছেন, "দুর্যোগের সময় কেউ যাতে সমুদ্রে না নামতে পারেন সেই দিকে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নজর রাখছে।"
এদিকে এনডিআরএফের একটি দল পাথরপ্রতিমার জি-প্লটে ও ৩০ জনের অন্য একটি দল গঙ্গাসাগরে এসেছে। কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা ও নামখানা ব্লকের সর্বত্রই বিশেষত উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম সর্তকতা করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্লকে মোতায়েন রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা।
গঙ্গাসাগরে যাতায়াতের জন্য কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ ঘাট থেকে কচুবেড়িয়া ফেরিঘাটে বুধবার দুপুর থেকে ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যা আগামী ২৫ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে তার আগেই আবহাওয়ার উন্নতি হলে প্রশাসন পুনরায় ফেরি সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নেবে। সব দিক থেকে প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না জেলা প্রশাসন।