নব্যেন্দু হাজরা: বাচ্চা হবেই শুনে চারিদিকে খোঁজ খোঁজ। কোথায় ভাল স্কুল আছে আলোচনা রোজ রোজ।
প্রায় দু’দশক আগে গাওয়া নচিকেতার একটি গানের লাইন। আমফানের তাণ্ডবলীলার পর আবারও যেন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল সেই লাইন। কারণ হল নিসর্গ। আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম। যা রেখেছে বাংলাদেশ। এই ঝড় কবে আসবে, কোথায় আছড়ে পড়বে, তার গতিবেগ কত হবে তার কোনও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই কিন্তু আমফানের তাণ্ডবলীলার পর পরের ঝড় নিসর্গ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
সমালোচকরা বলছেন, এটা অনেকটা বাচ্চা না হতেই স্কুলে ভরতি করানোর মতো বিষয়। চায়ের দোকান থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বত্রই আলোচনা। যেমন নিসর্গের পরের ঝড়টির নাম হবে ‘গতি’ (ভারত) ও তার পরের ঝড়টির নাম হবে নিভার (ইরান)। সুপার সাইক্লোন আমফানের নামকরণ হয়েছিল ১৬ বছর আগে। ২০০৪ সালে থাইল্যান্ড নামকরণ করেছিল এই ঝড়ের। ঝড়ের নামকরণের সেই ছিল প্রথম পর্যায়। তার আগে নিয়ম মেনে ঝড়ের নামকরণ হত না বিশ্বে।
[আরও পড়ুন : গাছ বাঁচানোর জালই মরণফাঁদ, বাগানের ধারালো নেটে মৃত্যু হনুমান শাবকের]
আবহবিদদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে ঝড় সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দিতে তার নাম থাকাটা দরকারি। নইলে একই সময় একই সমুদ্রে একাধিক ঝড় থাকলে চিহ্নিত করতে সমস্যা হয়। ঝড় চলে গেলেও একই সমস্যায় পড়েন আবহবিদরা। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে যে মহাসাগর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকায় থাকা দেশগুলি নামকরণ করে। চলতি শতকের শুরুর দিকে এই পদ্ধতি চালু হয়। পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা নাম ঠিক করে। যদিও কয়েক দশক আগে এসব নিয়ম ছিল না। তখন নানা ঘটনা থেকে ঝড়ের নাম ঠিক হত। কোনও ঝড়ে কোনও জাহাজ ডুবে গেলে সেই জাহাজের নামে হত ঝড়ের নাম।
[আরও পড়ুন : শতাব্দীপ্রাচীন বটগাছেরও শিকড়ে টান দিল শক্তিশালী আমফান, তছনছ বোটানিক্যাল গার্ডেন]
২০০০ সালে ঝড়ের নামকরণের জন্য নিয়ম বানানো হয়। তাতে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ও ইউনাইডেট নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়ার সদস্য দেশগুলি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। সমস্ত দেশের কাছ থেকে ঝড়ের নাম চাওয়া হয়। তার থেকে দেশ প্রতি আটটি করে নাম বাছাই করে মোট ৬৪টি ঝড়ের নামকরণ করা হয়। সেই তালিকায় শেষ নাম ‘আমফান’।
The post ফের মহাপ্রলয়! আমফানের পর আলোচনার কেন্দ্রে ‘নিসর্গ’ appeared first on Sangbad Pratidin.