সুব্রত বিশ্বাস: চাকরিপ্রার্থীকে পুলিশের কামড়ের ঘটনায় অবশেষে তৎপর লালবাজার। এই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ ডিসি সাউথ আকাশ মাঘারিয়ার। ডেপুটি কমিশনার সাউথ (২) বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন।
কেন আচমকা চাকরিপ্রার্থীর হাতে কামড়ে দিলেন তিনি? চাকরিপ্রার্থী কী সত্যি কোনও ইন্ধন জুগিয়েছিলেন? ওইদিন ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে পুলিশকর্মী ইভা থাপার সঙ্গে কথা বলবেন ডেপুটি কমিশনার সাউথ (২) বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়। এদিকে, আন্দোলনকারী ৩০ জন চাকরিপ্রার্থীদের জামিনের নির্দেশ দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, এটাকে অপরাধ বলে গণ্য করাই উচিত হয়নি।
[আরও পড়ুন: সুখবর! ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের ৩৯২৯ শূন্যপদে অবিলম্বে নিয়োগের নির্দেশ হাই কোর্টের]
উল্লেখ্য, গত বুধবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের সামনে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন টেট উত্তীর্ণরা। বিক্ষোভ হঠাতে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি শুরু হয়। টেনে হিঁচড়ে বিক্ষোভকারীদের প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়। প্রিজন ভ্যানের চাকার সামনে শুয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। অশান্তির মাঝে বিক্ষোভকারী অরুণিমা পালের দিকে ছুটে যান ইভা থাপা নামে ওই পুলিশকর্মী। চাকরিপ্রার্থীর হাতে কামড় বসান ওই মহিলা পুলিশকর্মী। যদিও পুলিশের তরফে পালটা অরুণিমার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলা হয়েছে। আক্রান্ত-সহ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়। ইভা থাপা নামে ওই পুলিশকর্মীকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। কেন আক্রান্তকে গ্রেপ্তার এবং আক্রমণকারীকে হাসপাতালে ভরতি করা হল, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা।
বৃহস্পতিবার পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, বিক্ষোভকারী অরুণিমা পালই নাকি আগে কামড় দিয়েছিলেন পুলিশকে। সেই ফুটেজও নাকি রয়েছে। যদিও বিক্ষোভকারী অরুণিমা পালের মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে ‘হিউম্যান বাইটে’র কথা। তা সত্ত্বেও পুলিশকর্মী ইভা থাপার হয়ে সওয়াল করেন অনেকেই।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্ররোচনা দিলে অনেক কিছুই হতে পারে।” অর্থাৎ অভিযুক্ত পুলিশের আচরণের পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি। এ বিষয়ে এদিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যা হয়েছে ঠিক হয়নি। পুলিশের কোড অফ কন্ডাক্টে এটা করা যায় না। তবে কী হয়েছে, সেই তদন্ত হচ্ছে।” বিরোধীরা আন্দোলনকারীদের উসকানি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিধায়ক অজিত মাইতিও সমর্থন করেন ওই পুলিশকর্মীকে। তিনি বলেন, “জোর করে চাকরি নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দিনের পর দিন পুলিশের উপর হুজ্জুতি চলছে। কেউ যদি পুলিশকে কামড়ে দেয়, তাহলে পুলিশ কি রসগোল্লা ছুঁড়বে?”