সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত এক সপ্তাহ ধরে লাগাতার বিক্ষোভে জ্বলছে পাকিস্তান (Pakistan)। কট্টর ইসলামপন্থী দল ‘তেহরিক-ই-লাবায়েক পাকিস্তান’-এর (TLP) নেতার গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ ইসলামাবাদ। রবিবার ৬ জন পুলিশকর্মীকে অপহরণ করল টিএলপি। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করল।
রবিবার দিনভর পুলিশের সঙ্গে টিএলপি’র সমর্থকদের সংঘর্ষ চলতে থাকে। নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের দাবি, তাদের চারজন সমর্থক মারা গিয়েছে পুলিশের গুলিতে। হিংসার আঁচ যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে সেই কারণেই পাকিস্তানের কোনও নিউজ চ্যানেলে ওই সংঘর্ষের দৃশ্য দেখানো হয়নি। কিন্তু টিএলপি’র বহু সমর্থক সোশ্যাল মিডিয়ায় রবিবারের সংঘর্ষের নানা ভিডিও শেয়ার করেছে। সেই সঙ্গে তাদের দলের সমর্থনে হ্যাশট্যাগও ছড়িয়ে দিয়েছে তারা। যা পাকিস্তানের ট্রেন্ডিং হয়ে গিয়েছে। লাহোর পুলিশের এক মুখপাত্র জানাচ্ছেন, দু’টি জ্বালানির ট্যাঙ্কারে কয়েক হাজার লিটার পেট্রল নিয়ে সংঘর্ষ শুরু করে টিএলপি সমর্থকরা। তারা পুলিশ কর্মীদের গায়ে পেট্রল বোমা ও পাথর ছুঁড়ে মারতে থাকে। এরপর ৬ জনকে অপহরণ করে নিজেদের সদর দপ্তরে নিয়ে যায় তারা। সদর দপ্তরে যাওয়ার সব রাস্তা অবরুদ্ধ করে দিয়ে পুলিশকে আরও বিপাকে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখনও সদর দপ্তরে পৌঁছতে পারেনি পুলিশ।
[আরও পড়ুন: দেশে বাড়ছে সংক্রমণ, ভারত সফর কাটছাঁট করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন]
টিএলপি আগে থেকেই সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ২০ এপ্রিলের আগেই পাকিস্তানের ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে হবে। সেই দাবি মানেনি ইমরান সরকার। সেখান থেকেই শুরু প্রতিবাদের। আসলে ফ্রান্সের ‘শার্লি এবদো’-তে হজরত মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র আঁকাকে কেন্দ্র করেই টিএলপির বিক্ষোভ। তাদের দাবি, ফ্রান্সের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক বন্ধ করতে হবে। কেবল ফরাসি রাষ্ট্রদূতই নয়, দেশ থেকে চলে যেতে হবে ফরাসি নাগরিক ও সংস্থাগুলিকেও।
গত নভেম্বরেই ইমরান খানের ‘তহরিক-ই-ইনসাফ’ সরকার টিএলপির সঙ্গে চুক্তি করেছিল ওই ফরাসি রাষ্ট্রদূতের বহিষ্কারের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে। তখন জানা গিয়েছিল, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এব্যাপারে পদক্ষেপ করবে সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সেই চুক্তির মেয়াদই শেষ হচ্ছে আগামী ২০ এপ্রিল। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দলের প্রধান সাদ হুসেন রিজভিকে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল টিএলপির বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে। এরপরই তাদের নিষিদ্ধ করা হয়।