সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপদের মুখে বিশ্ব! যেকোনও মুহূর্তে পাকিস্তানের (Pakistan) পরমাণু বোমার ভাণ্ডার চলে যেতে পারে সন্ত্রাসবাদীদের দখলে। সে দেশে পরমাণু বোমার জনক আবদুল কাদির খানের মৃত্যুর পরই এই নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক এ কিউ খানের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই ওই দেশটির এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচির অনেক গোপন ও প্রকাশিত তথ্য চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। একজন প্রতিভাবান পরমাণু বিজ্ঞানী হিসাবে তিনি পাকিস্তানকে শুধু পরমাণু শক্তিধর হিসাবেই বিশ্বের কাছে তুলে ধরেননি, সেই সঙ্গে পরোক্ষে নতুন ভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ উদ্যোগের জন্য আন্তর্জাতিক মহলকেও বাধ্য করেছিলেন তিনি। এখন সে দেশের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বিপদের মুখে। আর সেটা কোনও প্রতিপক্ষ দেশের দিক থেকে নয়, বরং অভ্যন্তরীণ কিছু শক্তির পক্ষে থেকেই। কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দখলে থাকা পারমাণবিক অস্ত্র সম্ভবত বিশ্বের জন্য সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন। অনেকেই বিশ্বাস করে, শুধুমাত্র একটি জায়গা থেকেই সেটা সম্ভব, দেশটির নাম পাকিস্তান।
[আরও পড়ুন: আমেরিকাকে কড়া বার্তা, তাইওয়ান ‘দখল’ নিয়ে কৌশলী চিনা প্রেসিডেন্ট]
১৯৯৮ সালে পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশের পরে থেকেই আন্তর্জাতিক মহল সে দেশের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রকৃতপক্ষে, তার অনেক আগে থেকেও, ইসলামাবাদকে কখনও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ মনে করা হত না। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগের অনেকগুলি কারণ রয়েছে। এটিই একমাত্র দেশ, যার হাতে পারমাণবিক অস্ত্র এবং ‘রাষ্ট্রনীতি’ হিসাবেই যাদের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর প্রতি মদত রয়েছে। সেই সব জঙ্গিগোষ্ঠার অনেককেই দেদার কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক মার্কিন কংগ্রেসের একটি সন্ত্রাসবাদী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান ‘বিদেশী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত অন্তত ১২টি গোষ্ঠীর আবাসস্থল। ধারণা করা হয়, এই গোষ্ঠীগুলির প্রতি অনেকে সহানুভূতিশীল এবং তারা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও সামরিক প্রতিষ্ঠানেও গোপনে তাদের উপস্থিতি থাকতে পারে। বর্তমানে পাকিস্তানের হাতে ১৬৫টি পরমাণু বোমা রয়েছে। আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতা দখলের পর পাকিস্তানের পরমাণু ভাণ্ডারের সুরক্ষা আরও কমেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তারা আফগান সরকারকে তুলনামূলকভাবে সহজেই ক্ষমতাচ্যুত করে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পর পাকিস্তানের পরমাণু ভাণ্ডার ‘জেহাদিদের হাতে পড়ার’ উদ্বেগ ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে।
[আরও পড়ুন: সেনা প্রত্যাহারের পর এই প্রথম তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে আমেরিকা, দোহায় মুখোমুখি দুই পক্ষ]
আমেরিকান থিংক ট্যাঙ্ক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে সমস্যার বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “পাকিস্তান এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে নিষ্ক্রিয় রাজনীতিবিদ এবং প্রশিক্ষিত সামরিক নেতাদের একটি নড়বড়ে জোট দ্বারা পরিচালিত সরকার অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।”