সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলনশক্তি কেড়েছে দুরারোগ্য ব্যধি। বেঁচে থাকাই যেন ক্রমে অভিশাপ হয়ে উঠছে। অসহ্য যন্ত্রণায় হার মেনেছেন জীবনযুদ্ধে। তাই ‘মুক্তি পেতে’ স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য সুইজারল্যান্ড যেতে চান এক ব্যক্তি! আর বন্ধুকে আটকাতে আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক মহিলা।
পিটিআই সূত্রে খবর, স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য বন্ধুর সুইজারল্যান্ড যাত্রা আটকাতে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক মহিলা। তাঁর আবেদন, নিজের জীবন শেষ করে দিতে বন্ধুর এই বিদেশযাত্রা। তাই বিদেশমন্ত্রক যেন কোনওমতেই অভিবাসনের ‘ছাড়পত্র’ না দেয়। আইনজীবী সুভাষ চন্দ্রনের মাধ্যমে করা ওই আবেদনে আরও বলা হয়েছে, “এতদিন এইমসে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তবে করোনা মহামারীর সময় তা ব্যহত হয়। সে জন্য শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। কিন্তু তাঁর চিকিৎসার জন্য কোনও আর্থিক সমস্যা নেই। ফলে দেশে ও বিদেশে তা চলতে পারে। ফলে এখনও তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার আশা আছে। এই অবস্থায় জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁর মা-বাবার জীবনকেও প্রভাবিত করবে।”
[আরও পড়ুন: ভর সন্ধেবেলা বাজারের মধ্যে যুবককে কুপিয়ে খুন! দিল্লির ঘটনায় চাঞ্চল্য]
জানা গিয়েছে, মায়োলজিক এনসেফ্যালোমাইলিটিস নামে এক দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি। ২০১৪ সালে রোগটি প্রথম ধরা পড়ে। এখন তিনি প্রায় শয্যাশায়ী। মাঝে মধ্যে নিজের ঘরেই অল্প হাঁটাচলা করতে পারেন। তাই এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে ‘মুক্তি পেতে’ স্বেচ্ছামৃত্যু বা ইউথেনেশিয়া (Euthanasia) চাইছেন ওই ব্যক্তি। আর তা আটকাতে আবেদনকারী দিল্লি হাই কোর্টে আরও জানিয়েছেন যে চিকিৎসার অজুহাতে সুইজারল্যান্ড যেতে ভিসা জোগাড় করেছেন তাঁর বন্ধু। তাই একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক।
উল্লেখ্য, যন্ত্রণাহীন সেই মৃত্যুপদ্ধতির নামই ইউথেনেশিয়া। আর সুইজারল্যান্ডে কিছু শর্ত পূরণ করলে আইনিভাবে তা সম্ভব। বলে রাখা ভাল, ‘ইউথেনেশিয়া’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘ইউ’ এবং ‘থানাতোস’ থেকে এসেছে। ‘ইউ’ শব্দটির অর্! সহজ এবং ‘থানাতোস’ কথাটির মানে মৃত্যু। অর্থাৎ ‘ইউথেনেশিয়া’ শব্দটির মানে দাঁড়াচ্ছে ‘সহজ মৃত্যু’। নেদারল্যান্ড, কানাডা, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ডে ইউথেনশিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কেবল মৃত্যুযন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়া মানুষই নয়, যাঁরা কোমায় রয়েছেন বছরের পর বছর ধরে, তাঁদেরও মৃত্যুর জন্য আবেদন করেন তাঁদের স্বজনরা।