সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় চারদিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায়। এখনও পর্যন্ত মোট ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জখম হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। রবিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই ঝামেলা দিল্লি পুলিশের উদাসীনতার কারণে বেড়েছিল বলেই প্রথম থেকে অভিযোগ উঠছিল। এর জেরে পুলিশ কমিশনারকেও বদলে দেওয়া হয়। কিন্তু, এবার আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। জানা গেল, সংঘর্ষ চলাকালীন দিল্লি পুলিশের কাছে ১৩ হাজার ২০০টি ফোন কল এসেছিল। সাহায্যের আরজি জানিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। কিন্তু, পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। এর ফলেই থামানো যায়নি গন্ডগোল। এই খবরটি প্রকাশ্যে আসার পরেই ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। দিল্লি পুলিশের সমালোচনায় সরব হয়েছেন নেটিজেনরা।
পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তাদের কন্ট্রোল রুমের লগবুক থেকেও। সেখানে দেখা গিয়েছে ২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুধুমাত্র যুমনা বিহার এলাকা থেকেই স্থানীয় ভজনপুরা থানায় মোট সাড়ে তিন হাজার ফোন কল এসেছিল। থানার আট পাতার লগবুকে তা নথিভুক্ত করা হলেও এর প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার কোনও উল্লেখ নেই। জানা গিয়েছে, ওই খাতায় থাকা আলাদা আলাদা কলামে কোথা থেকে ফোন এসেছিল এবং কী অভিযোগ করছিল তার উল্লেখ থাকলেও পুলিশ কী করেছে তার কোনও বিবরণ নেই। এর ফলে এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফোন কলগুলির জন্য কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এছাড়া দিল্লি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে থাকা লগবুক থেকে জানা গিয়েছে, গত রবিবার মোট ৭০০ ফোন কল এসেছিল। পরেরদিন অর্থাৎ সোমবার তা বেড়ে সাড়ে তিন হাজার হয়। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় সাড়ে সাত হাজারে। আর ২৬ তারিখ আসে দেড় হাজার ফোন। কিন্তু, এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: বসছে মুখ চিনিয়ে দেওয়ার ক্যামেরা, স্টেশনে অপরাধী প্রবেশ করলেই হাতেনাতে পাকড়াও ]
বিষয়টি পক্ষান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন যুমনা বিহারের বিজেপি(BJP) কাউন্সিলার প্রমোদ গুপ্তাও। ওই এলাকার সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা পুলিশ তাঁর ফোনই ধরেনি বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, অশান্তির সময় পুলিশের ভূমিকা খুবই হতাশাজনক ছিল। তারা যদি ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করত তাহলে কোনওদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না।
[আরও পড়ুন: ফের উসকানিমূলক মন্তব্য, দিল্লি মেট্রোয় ‘গোলি মারো’ স্লোগান দিয়ে ধৃত ছয়]
The post হিংসা থামাতে ফোন এসেছিল ১৩ হাজারেরও বেশি, কর্ণপাতই করেনি দিল্লি পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.