সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোট বাতিল শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একার সিদ্ধান্ত নয়। রিজার্ভ ব্যাংকের (Reserve Bank) সঙ্গে সবিস্তারে আলোচনার পরই ৬ বছর আগের ওই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদি সরকার। সুপ্রিম কোর্টে জানাল খোদ কেন্দ্র। মোদি সরকার শীর্ষ আদালতে জানিয়েছে, নোট বাতিল (Demonetisation) অনেক চিন্তাভাবনার ফসল। জাল নোট, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত, কালো টাকা এবং কর ফাঁকি রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৬ বছর আগে ২০১৬ সালে আচমকা ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে এই সংক্রান্ত শুনানিতে রাজি হয় আদালত। ১২ অক্টোবরে হয় প্রাথমিক শুনানি। ওই দিন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এই বিষয়ে জবাবদিহি করা কেন্দ্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে দেশের আমজনতার আদৌ লাভ হয়েছে কি না, এই বিষয়ে ৯ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা মারফত জানাতে হবে মোদি সরকারকে।
[আরও পড়ুন: মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ দখল ট্রাম্পের দলের, ‘বিভক্ত’ সরকারে চাপে বাইডেন!]
শীর্ষ আদালতের বেধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কেন্দ্র নিজেদের জবাব জানাতে পারেনি। কেন্দ্রের আইনজীবী কে ভেঙ্কটরমাণি সময়মতো হলফনামা পেশ করতে পারেননি। ক্ষুব্ধ আদালত কেন্দ্রকে নতুন করে হলফনামা পেশের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়। তারপরই কেন্দ্র হলফনামা পেশ করে জানিয়েছে, ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কালো টাকা, কর ফাঁকি এবং টেরর ফান্ডিং অর্থাৎ সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। এটা সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। তবে শুধু নোট বাতিলই যে এগুলি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, তেমন নয়।
[আরও পড়ুন: বালিতে মোদি-জিনপিং করমর্দন, জাপান সাগরে গর্জন ভারতীয় রণতরীর, কী বার্তা দিল্লির?]
কেন্দ্রের এই হলফনামা অনেকাংশেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপির (BJP) সেসময়ের বক্তব্যের পরিপন্থী। নোট বাতিলের (Note Ban) পর বহু বিজেপি নেতাই দাবি করেছিলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মস্তিস্কপ্রসূত সিদ্ধান্ত। এবং সরকারের মন্ত্রীরাও সেকথা জানতেন না। অথচ, কেন্দ্রের হলফনামায় বলা হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত অনেক ভেবেচিন্তে অন্তত মাস ছ’য়েক ধরে রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নোট বাতিলের ব্যর্থতার দায় নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি?