খগেন মুর্মু (প্রত্যক্ষদর্শী বিজেপি সাংসদ): প্রথমটায় বুঝে উঠতে পারিনি। তখন জিরো আওয়ার। দেড় মিনিট বরাদ্দের মধ্যে ৫০ সেকেন্ড মতো বলেছি। আচমকা আমার ঠিক ডান দিকের গ্যালারিতে বিকট আওয়াজ। ঘুরে তাকিয়ে কিছু দেখতে না পেয়ে আবার বলতে শুরু করতে যাব তখন দ্বিতীয় আওয়াজ। সাংসদরা পাকড়ো পাকড়ো করে চিৎকার করছেন। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি দু’টি ছেলে ফ্লোরে সাংসদদের বসার টেবিলে লাফালাফি করছে। তাঁরা নাকি দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মেরেছে। আর কিছু সাংসদ তাঁদের ধরার আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তখনই দু’জনে জুতোর ভিতর থেকে কিছু একটা বের করে রঙিন ধোঁয়া ছাড়তে শুরু করেছে। এতক্ষণ ভয় পাইনি। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলাম। সম্বিত ফিরতেই এবার বুকটা ধরাস করে উঠল। মনে পড়ে গেল ২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার ঘটনা। যদিও তখন আমি বিধায়ক। কিন্তু পুরো ঘটনা টেলিভিশনে দেখেছিলাম। মনে পড়তেই আতঙ্কে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। মৃত্যু ভয় পাচ্ছিলাম। সেই সময় চারিদিকে উপস্থিত সাংসদদের বিকট চিৎকার। ছেলে দুটোকে সাংসদরা ঘিরে ধরেছে। কী বলছিল বুঝতে পারছিলাম না।
[আরও পড়ুন: কেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে সংসদে? তাণ্ডবের পর আসছে কোন বদল]
এর মধ্যেই স্পিকারের চেয়ারে থাকা রাজেন্দ্র আগরওয়াল অধিবেশন স্থগিত করে দেন। ততক্ষণে অধিবেশন কক্ষ রঙিন ধোঁয়ায় ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিষাক্ত গ্যাস যে নয় তা বুঝেছি্লাম। কারণ বিষাক্ত গ্যাস হলে চোখ মুখ জ্বালা করতে। এদিকে সংসদের নিরাপত্তারক্ষীরা কক্ষে ঢুকে পড়েছেন তখন। তাঁরাই ছেলে দু’টিকে পাকড়াও করে বাইরে নিয়ে যান। আমিও গুটিগুটি পায়ে অন্য সাংসদদের সঙ্গে বাইরে চলে আসি। বাইরে তখন অন্যচিত্র। চারিদিক ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। সাংবাদিকরা ছুটোছুটি করছেন। বলছেন বাইরে নাকি আরও কয়েকজন রয়েছে। ফের আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। কিন্তু এঁরা যে জঙ্গনি নন তা নিশ্চিত করেন এক সাংবাদিক। একথা শোনার পরেই স্বস্তি পাই।