সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষ্ণ ঘাঁটির কাছে ভারতীয় সেনা আউটপোস্টে ঢুকে ২ জওয়ানের মাথা কেটে নিয়ে যায় পাক সেনার স্পেশ্যাল ফোর্স। কিন্তু নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে থার্মাল ইমেজার্স থাকা সত্ত্বেও কেন পাক সেনার সন্দেহজনক গতিবিধি ধরা পড়ল না?
[রেলের খাবারে চরম দুর্নীতি, এক কেজি দইয়ের দাম ৯৭২০ টাকা]
বিশেষ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন পাক সেনা একা অনুপ্রবেশ করেনি। পাক সেনাকে কর্ডন করে এনেছিল ৫-৬ জন মুজাহিদিন জঙ্গি। ভারতীয় সীমানার প্রায় ২৫০ মিটারের মধ্যে ঢুকে পড়ে তারা। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তা মনে করছেন, পাক সেনা ও মুজাহিদিনকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিল পাকিস্তানের এলিট কমান্ড ফোর্স- ব্যাট বা বর্ডার অ্যাকশন টিম।
সেনা অফিসাররা বলছেন, ৩০ মে ও পয়লা এপ্রিলের মধ্যে গভীর রাতে নাংগটেকিতে কিরপান পোস্টে হ্যান্ড হেল্ড থার্মাল ইমেজার্স রয়েছে। যার কাজ হল, কোনও প্রাণির শরীরের উত্তাপকে কাজে লাগিয়ে তাকে ট্র্যাক করা, তার ছবি তোলা। কিন্তু সেদিন রাতে কেন পাক সেনা ও জঙ্গিদের ছবি উঠল না? সূত্রের খবর, এই থার্মাল ইমেজার্স ফুলপ্রুফ নয়। তাকে বোকা বানানোর একাধিক উপায় জানা ছিল পাক এলিট ফোর্সের। সূত্রের খবর, জওয়ানদের উপর মূল হামলাটি চালানো হয় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে। ততক্ষণে নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে পাক সেনার প্রশিক্ষিত কোনও সদস্য ঘাস ও পাতা দিয়ে তৈরি ক্যামোফ্লেজ পোশাক পরে ঘাপটি মেরে বসেছিল।
[সেনার উপর ভরসা রাখুন, পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য জেটলির]
দুই ভারতীয় জওয়ানের মুণ্ডচ্ছেদের পর পাক সেনা ভারতীয় পেট্রল টিমের বিরুদ্ধে লাগাতার কভার ফায়ার করতে থাকে। যাতে বাকি জওয়ানরা কিছুতেই পাক সেনার পিছু ধাওয়া না করতে পারে। পাশাপাশি, রোজা ও বাট্টাল পোস্টে তীব্র মর্টার হামলার জন্য চারপাশে ভারী ধোঁয়ার আস্তরণ জমে। পাক সেনা সেই সুযোগে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে ফিরে যায়। যাওয়ার সময় দুই জওয়ানের মুণ্ডু কেটে ‘ট্রফি’ হিসাবে নিয়ে যায়।
পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের হামলায় মৃত্যু হয় সেনাবাহিনীর নায়েব সুবেদার পরমজিত্ সিং ও বিএসএফর এক হেড কনস্টেবল প্রেম সাগরের৷ গুরুতর জখম হয়েছেন রাজেন্দ্র সিং নামে এক জওয়ান৷ সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কম্যান্ড হামলার নিন্দা করে পাল্টা হুমকি দেয়, পাকিস্তানের এই ‘জঘন্য’ কাজের উপযুক্ত জবাব দেবে ভারত৷ রবিবারই নিয়ন্ত্রণরেখা ঘুরে দেখেন পাক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া৷ তারপরই ঘটল এই নৃশংস হামলা৷ বুধবার রাতে পাক হামলার কড়া নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ বলেছেন,“দেশের সেনাবাহিনীর উপর ভরসা রাখুন।” যদিও পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়েছে, তারা কোনও সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালায়নি৷
দুই ভারতীয় জওয়ানের মুণ্ডচ্ছেদের অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারে না পাকিস্তান। পাকিস্তানের বক্তব্যের কোনও সত্যতা নেই। বুধবার এই ভাষাতেই ইসলামাবাদের কড়া সমালোচনা করেন জেটলি। তাঁর বক্তব্য, “পাক সেনার প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া এই কুকীর্তি সম্ভব নয়।” তবে পাকিস্তানকে তাদের এই কাজের খেসারত দিতে হবে বলেও এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলেও একই ভাষায় এদিন জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন ফোর্সই যে দুই ভারতীয় জওয়ানের মাথা কেটে নিয়ে গিয়েছে, তার উপযুক্ত প্রমাণ রয়েছে ভারতের কাছে। শহিদ দুই জওয়ানেরই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। রোজা নালা ও তার আশেপাশের এলাকায় রক্তের দাগ দেখে স্পষ্ট, কুকর্ম সেরে দুষ্কৃতীরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ফের পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দিকে ফিরে গিয়েছে।
The post ‘থার্মাল ইমেজার্স’ এড়িয়ে কী করে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরল পাক সেনা? appeared first on Sangbad Pratidin.