সুকুমার সরকার, ঢাকা: লাগাতার আন্দোলনের মুখে চাপে পড়ে পিছিয়ে গেল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ভোট। ৩০ জানুয়ারি, সরস্বতী পুজোর দিন নয়, ভোট হবে পয়লা ফেব্রুয়ারি। শনিবার জরুরি বৈঠকের পর নতুন দিন ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
৩০ জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন – ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণে নির্বাচন পিছনোর দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কারণ, ওই দিন হিন্দুদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পুজো। তাকে কেন্দ্র করে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন নিয়ে ৬ জানুয়ারি হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। ১৪ তারিখ হাই কোর্ট সরাসরি রিট খারিজ করে দেয়। দু’দিন পর সেই খারিজের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: মায়ানমার সফরে শি জিনপিং, রোহিঙ্গাদের প্রত্যর্পণ নিয়ে চিন্তায় বাংলাদেশ!]
অপরদিকে, ভোটের দিন বদলের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনশনে বসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার, অনশনের তৃতীয় দিনে পাঁচজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সদস্য তানভীর হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের অভি দাস, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অর্ণব হরে, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের দীপন এবং টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের আকাশ চৌধুরি। এর আগেও ২ ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছিল।
যদিও ভোটের দিন পিছনো নিয়ে প্রাথমিকভাবে শাসকদল আওয়ামি লিগের তেমন কোনও দাবি ছিল না। শনিবার আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডিতে দলের সভাপতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, ”ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি বিবেচনায় এনে নির্বাচন কমিশন হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ভোটের তারিখ পরিবর্তন হলেও কোনও আপত্তি নেই। এটি নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার।” তবে অনশনে বসে একের পর এক পড়ুয়ার অসুস্থতা এবং আদালত পর্যন্ত বিষয়টি গড়িয়ে যাওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
[আরও পড়ুন: সরস্বতী পুজোর দিন ভোট না করানোর দাবিতে অনশন, হাসপাতালে দুই পড়ুয়া]
নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে বসে একের পর এক পড়ুয়ার অসুস্থতার খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেন নির্বাচন কমিশন। এদিন বিকেল ৪ টে নাগাদ নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার নেতৃত্বে জরুরি বৈঠকে বসেন আধিকারিকরা। হাজির হন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের দুই রিটার্নিং অফিসারও। প্রায় ঘণ্টা দুই আলোচনার পর সন্ধেবেলা কমিশনার ঘোষণা করেন, ৩০ জানুয়ারির বদলে ভোট হবে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ।
The post আন্দোলনে মিলল সাফল্য, ঢাকার দুই পুরনিগমের ভোট পিছিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন appeared first on Sangbad Pratidin.