সংগ্রাম সিংহ রায়, শিলিগুড়ি: ফেব্রুয়ারিকে হেরিটেজ মাস হিসেবে ঘোষণা করল দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর)। এই বিশেষ মাসে টয় ট্রেন পরিষেবাকে আরও জনপ্রিয় করতে একগুচ্ছ উদ্যোগ নিল ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে টয় ট্রেন ভ্রমণ করিয়েছে ডিএইচআর৷ পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদেরও বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়া হল৷
[নাগরিকত্ব বিলে সমর্থনের আরজি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি, বড়মার সই ঘিরে বিতর্ক ]
গত শনিবার রংটং পর্যন্ত ওই স্কুল পড়ুয়াদের ঘুরিয়ে আনা হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিনামূল্যে প্রমোদ ভ্রমণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে, এই খবর যাতে তাঁরা সমস্ত বিদেশি পর্যটকদের কাছে পৌঁছে দেয়৷ ডিএইচআরের অধিকর্তা মিলন কুমার নার্জারি বলেন, “বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছরে টয় ট্রেনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা টয় ট্রেনকে ফের জনপ্রিয় করতে এবং বিশ্বের কাছে সদর্থক বার্তা দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, এতে ভাল ফল মিলবে।” টয় ট্রেনের প্রচার বাড়াতে ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার শিলিগুড়ির এনজেপি রেলওয়ে গার্লস হাইস্কুল ও বাণীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুলের ১৫ জন পড়ুয়াকে টয় ট্রেনে জংশন থেকে রংটং পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। না চাইতেই এমন সফরের সুযোগ পেয়ে স্বভাবতই খুশি পড়ুয়ারা। অনেকের কাছেই এটা ছিল প্রথম টয় ট্রেন ভ্রমণ। তাই উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। ফলে এই উদ্যোগের প্রথম পর্যায়ে ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সফল বলেই মনে করছে৷
[মেরিন ড্রাইভ, মেরিনা বিচের আদলে শিলিগুড়িতে মহানন্দা ড্রাইভওয়ে]
জানা গিয়েছে, টয় ট্রেনের সমস্ত স্টেশনকে আলোকিত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ডিএইচআরের এক অধিকর্তা জানান, ইউনেসকো-র তরফে গয়াবাড়ি ও সোনাদা স্টেশনকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এই মর্মে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির তরফে৷ ফলে ওই স্টেশন দু’টিকে পূর্বের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়াই এখন তাঁদের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ৷ প্রসঙ্গত, ২০১৭-র জুন মাসে ধারাবাহিক হিংসায় ওই স্টেশন দুটিকে পুড়িয়ে দিয়েছিল বিমল গুরুংয়ের সমর্থকরা৷ এতে স্টেশন দু’টির মূল চেহারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেটিকে সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে ডিএইচআর সূত্রে খবর৷
গোটা বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী উত্তরবঙ্গের ট্যুরিজম সার্কিটও। অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অব ট্যুরিজমের কর্ণধার রাজ বসু বলেন, “গোটা বিষয়টিতে ডিএইচআর-এর সদিচ্ছার উপর নির্ভর করছে। এটা ভাল লক্ষণ। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে টয় ট্রেনের আগের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করবে।” হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “টয় ট্রেনকে নিয়ে এটা অত্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। টয় ট্রেনের উপর গোটা দার্জিলিংয়ের ভাবমূর্তি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই এটি ঠিক থাকলে দার্জিলিং ও দার্জিলিংকে ঘিরে বিস্তীর্ণ পর্যটন এলাকার উন্নতি হবে।”
The post বিনামূল্যে টয় ট্রেনে ভ্রমণ, বিশেষ ঘোষণা দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.