শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: দাবিমতো বাড়তি টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না পরিবারের। আর তার ফল ভুগতে হল চার বছরের অসুস্থ শিশুকে। উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur)এক নার্সিংহোমে অসুস্থ শিশু ছুড়ে ফেলা এবং রোগীর পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল। অভিযোগের তির এক শল্য চিকিৎসক-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে। নার্সিংহোমের মালিক ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে শিশুর পরিবার।
সোমবার বিকালে এই ঘটনা ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের (Raiganj) উকিলপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে রায়গঞ্জের বিহার লাগোয়া বাহিন পঞ্চায়েতের গোয়াবাড়ির বাসিন্দা ইমারত আলি তাঁর চার বছরের ছেলে সোহেল আলিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই নার্সিংহোমে। সেখানকার শল্য চিকিৎসকের (Surgeon) কাছে চিকিৎসা করানোর জন্য যান। কথামতো ৪০০ টাকা জমা দিয়ে ছেলের নাম নথিভুক্ত করেন। কিন্তু তার পরও কয়েক ঘন্টা ধরে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ঠায় বসে থাকতে হয় তাঁকে। অভিযোগ, অন্যান্য রোগীদের কাছ থেকে চারশো-পাঁচশো কিংবা হাজার টাকা বেশি আদায় করে আগেভাগে চিকিৎসা (Treatment) করিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন এই চিকিৎসক।
[আরও পড়ুন: কুলতলির সাদ্দাম যেন ‘এল চাপো’! পুলিশকে গুলি করে খাটের নিচের সুড়ঙ্গপথে পগার পাড়]
কেন এমন করছে চিকিৎসক? এই প্রশ্ন তুলে ইমারত আলি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে নার্সিংহোমের কর্মীরা ছেলে-সহ তাঁকে ধাক্কা মেরে বের করে দেন অভিযোগ। চার বছরের অসুস্থ শিশুকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই হামলায় জখম হন চার বছরের শিশু-সহ দাদু সত্তর বছরের সাদেক আলি এবং বাবা ইমারত আলি।
[আরও পড়ুন: আচমকা জড়িয়ে ধরেছিল যুবক, চিৎকার করতেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে গলা টিপে ‘খুন’ হাওড়ায়!]
ইমারত আলির অভিযোগ, “এদিন ভোর পাঁচটার সময় আমার চার বছরের শিশুর বাঁ হাতের মাংসপিন্ডের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসি। চিকিৎসককে দেখানোর জন্য ৪০০ টাকা অগ্রিম জমা দিই। ঘড়িতে বেলা দুটো বেজে গেলেও আমার চার বছর বছরের শিশুকে দেখেনি চিকিৎসক। আমার নাম পিছনে রেখে পিছনের রোগীদের নাম অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে সামনে এনে রোগী দেখছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে ডাক্তারের কমপাউন্ডার আমাকে এবং আমার বাবাকে মারধর করে। জামা ছিঁড়ে, দেয়। আমার বাচ্চা যেখানে শুয়েছিল, সেখান থেকে ছুঁড়ে, ফেলে দেয়। আমি চাই ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।" রায়গঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক সুবোধ বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন করা সত্বেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।