গৌতম ব্রহ্ম ও অভিরূপ দাস: যোনি সঙ্গমের তুলনায় পায়ুসঙ্গম অনেক বেশি ঝুঁকির। নিরাপদ নয় যোনি এবং লিঙ্গ-লেহনও। তাই যৌনরোগ মোকাবিলায় এবার সমকামীদেরও কন্ডোম ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মত, ভাইরাস সমকামী-বিষমকামী বোঝে না। সমকামীদের ক্ষেত্রেও অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক ডেকে আনছে এইডসের মতো মারণ-ব্যাধি। সুপ্রিমকোর্ট সমকামকে বৈধতা দিতে খুশি শহরের চিকিৎসকরা। চাইছেন, বিষমকামীদের মতো সমকামীরাও সমস্ত ছুঁৎমার্গ সরিয়ে যৌন অসুখ নিয়ে সচেতন হন। প্রশ্ন উঠছে, বিষমকামীদের তুলনায় সমকামীদের ক্ষেত্রে এইডসের সম্ভাবনা দ্বিগুণ কেন?
বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, একটি লিঙ্গ সহজেই রক্তপাত না ঘটিয়ে যোনিতে ঢুকে যায়। কিন্তু পায়ুসঙ্গমের সময় তা ঘটে না। সে সময় লিঙ্গ মলাশয়ে চাপ দিয়ে প্রবেশ করাতে হয়। সেক্ষেত্রে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ। পায়ুসঙ্গমে এডসের জীবাণু এইচআইভি সহজেই রক্তে চলে আসে। তাছাড়া যৌন সঙ্গমের সময় যোনি বেশি পরিমাণে পিচ্ছিল পদার্থ নিঃসরণ করে। কিন্তু মলাশয়ে এমনটা হয় না। তাই যৌন সঙ্গমের সময় সহজেই মলাশয় জখম হয়। এইচআইভির সম্ভাবনা বাড়ে। সাধারণ যৌন সংসর্গে কন্ডোম ব্যবহার করেন যুগলরা। কিন্তু সমকামীদের মধ্যে কন্ডোম ব্যবহারের প্রবণতা নেই বললেই চলে। চিকিৎসকরা বলছেন, কন্ডোমের ব্যবহার এইডসের সংক্রমণ অনেকটাই আটকে দেয়। এমনটাই জানালেন দুর্বারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক ডা. প্রতিম রায়। তাঁর মত, “পায়ুসঙ্গমে এডসের ঝুঁকি বরাবরই বেশি।”
[বাম-কংগ্রেস ভারত বনধে মিলল না সাড়া, কলকাতায় স্বাভাবিক জনজীবন]
আসলে এইডস ছড়ায় এইচআইভি ভাইরাস থেকে। সুরক্ষিত যৌনজীবন না থাকলে সমকামী বা বিষমকামী যে কেউ এইডসে আক্রান্ত হতে পারে। আমেরিকায় সমকামীদের মধ্যে এডস রোগের হার বেশি। তবে এটাও ঠিক, অনেক দেশে বিষমকামীদের মধ্যে এইডসের হার বেশি। তাই শীর্ষ আদালতের রায়কে ঢাল করে যদি অসুরক্ষিত পায়ুসঙ্গমের ইচ্ছে ডালপালা মেলতে থাকে তবে কিন্তু বিপদ আসন্ন। এদিকে সমকামীদের ওরাল সেক্স নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই ভাবে চুমু খেলে বা যৌনাঙ্গ লেহনে এইডস হয়। এটা পুরোপুরি সত্যি নয়। স্বাভাবিক যৌনসঙ্গমের তুলনায় মুখমেহনে বা চুম্বনে এডস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
তবে অসুরক্ষিত ওরাল সেক্স থেকেই সিফিলিস, গনোরিয়া, ক্ল্যামাইডিয়া, জেনিটাল হারপিসের মতো মারাত্মক রোগ আসতে পারে। নারীর যোনিগাত্রে তিনটি লেয়ার বা স্তর রয়েছে। তাই এটি অনেক শক্ত এবং স্থিতিস্থাপক। ফলে যৌনসঙ্গমের সময় যোনি আহত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উলটো দিকে কোনও স্তর না থাকায় রক্তজালিকা একেবারে মলাশয়ের গায়ে অবস্থান করে। তাছাড়া মলাশয়ের ছিদ্রের অভ্যন্তরে জায়গা অপ্রশস্ত। তাই পায়ুসঙ্গমের সময় মলাশয় গাত্রের সঙ্গে লিঙ্গের ঘর্ষণের মাত্রাও বেশি। ফলে মলাশয় গাত্র রক্তাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পরিসংখ্যানও বেশ দুশ্চিন্তার। দুর্বারের তরফে প্রধান উপদেষ্টা ডা. স্মরণজিৎ জানা জানিয়েছেন, এদেশে বিষমকামী যৌনকর্মীদের তিন শতাংশ এইডসে আক্রান্ত। অন্যদিকে রূপান্তরকামীদের মধ্যে এইডসের প্রকোপ সাত থেকে ১১ শতাংশ। সমকামীদের মধ্যে চার থেকে সাত শতাংশ। অতএব আবেগের নৌকায় গা ভাসিয়ে পায়ুসঙ্গম না করারই পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
[বনধ মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন, শহরের রাস্তায় চলছে অতিরিক্ত বাস ]
The post সমকামে বাড়তে পারে এইডসের প্রকোপ, উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা appeared first on Sangbad Pratidin.