সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেবারে নিখুঁত নিশানা। ভিড়ের মধ্য থেকে ছুটে আসা গুলির লক্ষ্য ছিল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথা। তবে কথায় বলে রাখে হরি মারে কে? ঠিক সেটাই ঘটেছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। ভাগ্যবিধাতার দয়ায় মাথাটা সামান্য একপাশে ঘুরিয়ে ছিলেন তিনি। কয়েক মিলি সেকেন্ডের সেই ব্যবধানই জীবন ও মৃত্যুর টেনে দেয় সীমারেখা। নবজীবন ফিরে পান মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর সেই ভিডিও।
শনিবার জনসভা চলাকালীন বন্দুকবাজের প্রাণঘাতী হামলা থেকে ট্রাম্পের প্রাণে বেঁচে যাওয়াকে 'মিরাকেল' ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। হামলার মুহূর্তের যে ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, একেবারে নিখুঁত লক্ষ্যে গুলি চালিয়েছিল হামলাকারী। কয়েক মিলিসেকেন্ডের ওই ব্যবধান তৈরি না হলে গুলি সরাসরি ফুঁড়ে দিত ট্রাম্পের মাথার খুলি। সেক্ষেত্রে বাঁচার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে একেবারে শেষ মুহূর্তে ডানদিকে সামান্য ঘাড় ঘুরিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তাতেই কান ঘেঁষে চলে যায় খুনে গুলি।
[আরও পড়ুন: ৬ মাসে হত অন্তত ৪০০! মার্কিনমুলুকে আতঙ্কের অপর নাম বন্দুকবাজ]
ঘটনার পরে ট্রাম্প নিজে সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন সোশাল মিডিয়ায়। লিখেছেন, ‘বুলেট আমার ডান কানের উপরের অংশ ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। বুলেট আমার ত্বক ছুঁয়ে যেতেই বসে পড়ি। খুব রক্ত পড়ছিল। বুঝতে পারছিলাম ঠিক কী ঘটে গিয়েছে।’ আপাতত নিউ জার্সির বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন তিনি। তবে এত কিছুর পরও থামার পাত্র নন ট্রাম্প। প্রচার চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। রবিবার মিলওয়াকিতে যাওয়ার পথে নিজের বিমানে বসে ট্রাম্প নিউইয়র্ক পোস্টকে সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার এখানে থাকার কথা নয়, আমি মারাও যেতে পারতাম।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর হামলার মুহূর্ত।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন আশ্চর্য প্রাণরক্ষাকে প্রভু জগন্নাথের কৃপা হিসেবে দেখছে ইসকন। পেনসিলভেনিয়ার গুলি কাণ্ডের পর সংস্থার মুখপাত্র তথা কলকাতা অফিসের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস রবিবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে জানান, ১৯৭৬ সালে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় প্রথম রথযাত্রার পরিকল্পনা করেছিল ইসকন। কিন্তু কেউ রথ তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। প্রায় একডজন ফার্ম মালিকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ট্রাম্পের দ্বারস্থ হয় ইসকন কর্তৃপক্ষ। সবাইকে অবাক করে ট্রাম্প সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। রথ তৈরির জন্য তাঁর সদ্য কেনা রেল ইয়ার্ড দিয়ে দেন। এর জন্য এক পয়সাও নেননি বছর তিরিশের উদীয়মান রিয়েল এস্টেট উদ্যোগী ট্রাম্প। ইসকনের বিশ্বাস, সেই সহযোগিতার জন্যই ৪৮ বছর পর প্রভু জগন্নাথ ট্রাম্পকে আততায়ীর গুলিবৃষ্টির হাত থেকে অলৌকিকভাবে বাঁচিয়েছেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদ হোক বা কপাল জোর, নিশ্চিত মৃত্যুকে পাশ কাটানো ট্রাম্পকে দেখে গোটা বিশ্ব বলছে, 'এভাবেও বেঁচে ফেরা যায়।'