নিয়মিত কিছু টেস্ট করালে গভীরে পৌঁছবে না অসুখ। পরামর্শে স্যাংগুইন ডায়াগনস্টিকসের কর্ণধার প্যাথোলজিস্ট সুমিত মণ্ডল।
– ‘কী দরকার শুধু শুধু টেস্ট করিয়ে? দিব্যি তো ভাল আছি।’
– ‘ডাক্তার বলেছেন টেস্ট করাতে, কিন্তু আর কয়েক মাস যাক, তারপর করাব।’
এমন মনোভাবই বিপদের। জরুরি কিছু রুটিন টেস্ট করিয়ে নিলে অসুখকে গোড়াতেই নির্মূল করা যায়। সময়ে টেস্ট না করিয়ে রোগ ফেলে রাখলে রোগ বাড়ে।
কোন কোন টেস্ট কতদিন অন্তর করালে কোন অসুখ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যাবে না, তা দেখে নেওয়া যাক –
১) হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ ও হাই ব্লাড সুগারের কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে। লাইফস্টাইল ডিজিজ হিসাবে এখন ৩০-৪০ বছর বয়স হতে না হতেই বেশিরভাগ হাই ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিসের রোগী। তাই বয়স ৩০ পেরোলেই বছরে একবার করে ফাস্টিং সুগার টেস্ট অথবা এইচবিএ১সি টেস্ট করানো উচিত। ফাস্টিংয়ের রিপোর্ট ১০০ mg/dL-এর কম থাকলে নর্মাল। কিন্তু এর চেয়ে একটু বেশি যদি দু’-তিন বছর ধরে থাকে তবে, তা ভাবার বিষয়। অন্যদিকে এই বয়সে এইচবিএ১সি রিপোর্ট ৫.৬-এর নিচে থাকলে ভাল। ৫.৬-৬.৬ হল প্রি-ডায়াবেটিক। এর বেশি মানেই সে ডায়াবেটিক রোগী। আর যাঁদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বছরে অন্তত দু’বার এই টেস্ট করান।
[আরও পড়ুন: মোমো খেতে গিয়ে মৃত্যু প্রৌঢ়ের, তড়িঘড়ি সতর্কবার্তা এইমসের]
২) হাই প্রেশার থাকলে মাঝে মাঝে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বা বাড়িতে চেক করাতে হবে। এর সঙ্গে লিপিড প্রোফাইল করতে হবে। তার জন্য রাতে খাওয়ার ১৪ ঘণ্টা পরে সকালে উঠে খালি পেটে এই টেস্ট করতে হবে। এতে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড (Tg), হাইডেনসিটি লিপোপ্রোটিন, এলডিএল (LDL) ও এইচডিএল (HDL)। LDL, Tg, কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০০-র কম থাকা ভাল। অন্যদিকে HDL ৫০-৫৬ বা বেশির দিকে থাকা ভাল। এই টেস্টগুলি প্রতি বছর একবার অন্তত করান। কিন্তু যদি রিপোর্ট হাই বা লো দেখেন তা হলে তখনই ডাক্তারের কাছে যান। ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনুন।
৩) সার্ভাইক্যাল ক্যানসার শনাক্ত করতে ৩০-৬৫ বছর বয়সি মহিলাদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একবার প্যাপস্মিয়ার টেস্ট ও HPV করা উচিত। শুধু প্যাপস্মিয়ার টেস্ট করতে চাইলে তিন বছর অন্তর করতে হবে। শুধু HPV চাইলেও পাঁচ বছর অন্তর। নিয়মিত চেক করলে এই ক্যানসার প্রতিহত করা যায়।
৪) ব্রেস্ট ক্যানসার রুখতে ৪০-৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত সব মহিলার উচিত প্রতি দু’বছর অন্তর ম্যামোগ্রাফি করা উচিত।
৫) প্রস্টেট ক্যানসার শুরুতেই চিহ্নিত করতে পঞ্চাশোর্ধ্ব পুরুষরা প্রতি বছর একবার করে PSA টেস্ট করা ভাল।