ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: কথায় আছে বিপদ কখনও একা আসে না। বাংলার সাম্প্রতিক চিত্র বোধহয় তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। প্রায় নির্মূল হয়ে যাওয়া কালাজ্বর আবার করোনা আবহে ফিরে এসেছে পশ্চিমবঙ্গে। পুজোর আগে কোভিড -১৯ ভাইরাসের সঙ্গেই কালাজ্বর দমনে কোমর বেঁধে নেমেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য, সীমান্তবর্তী জেলায় আবার কালাজ্বরে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। আশঙ্কা, পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে ফিরছে এই রোগ। তথ্য বলছে, এই বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত প্রায় ১১০। গত বছর ছিল ৮৭।
স্বাস্থ্য দপ্তরের ‘ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’ অনুযায়ী ক্ষুদ্রাকৃতির বেলেমাছি থেকে এই রোগ দ্রুত ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর হয়। দীর্ঘদিন জ্বর কমতে চায় না। লিভারের সমস্যা হয়। প্লীহা বড় হয়। শরীরে কালো দাগ হয়। বিশেষজ্ঞ এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “দক্ষিণ দিনাজপুরের শীতলকুচি, মালদহের হবিবপুর ব্লকে রোগীর সন্ধান মেলায় বিশেষজ্ঞ টিম গিয়েছে। অন্তত ২২ জন চিহ্নিত হয়েছে। সবাই নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির। রোগ নিরাময়ে ৫৬ দিনের ওষুধ দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন : খড়গপুরে রাস্তায় প্রতীক্ষারতদের পিষে দিল তেলের ট্যাঙ্কার, ঘটনাস্থলেই মৃত ৩]
উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া, বনগাঁ, বসিরহাট সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামে কীটনাশক (ডিডিটি) স্প্রে শুরু হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে গত কয়েক মাসে বহু পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরেছেন। সম্ভবত এভাবেই ফের সাতটি জেলায় কালাজ্বর ছড়িয়েছে।” তবে এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর নেই।
স্বাস্থ্য দপ্তরকে ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল জানিয়েছে, বেলেমাছির ডানায় এক ধরনের পরজীবী বাসা বাঁধে। সেই পরজীবী মানুষের সংস্পর্শে এলেই মানবদেহে বাসা বাঁধে এই রোগ। চলতি বছরেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশ থেকে কালাজ্বর নির্মূল করার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সেই কাজ থমকে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ে।