অর্পণ দাস: গতবারের ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। এবার ফাইনালে ওঠার পর ফের ডুরান্ড কাপ জয়ের আশা দেখেছিল সবুজ-মেরুন জনতা। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা যায়, কোন শক্তিতে লক্ষ্যপূরণের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা? অধিকাংশ মোহনবাগান ভক্তই হয়তো বলতেন একজনের নাম। তিনি বিশাল কাইথ। নকআউটে দুটি ম্যাচই যে প্রায় একার হাতে জিতিয়েছেন মোহনবাগানের গোলকিপার। যদিও ফাইনালে বিশালের হাত ট্রফি এনে দিতে পারল না সবুজ-মেরুন তাঁবুতে।
ডুরান্ড ফাইনাল গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। আর সেখানে যে গোলকিপার সব সময় নায়ক হবেন, তার নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারেন না। এবার নায়ক হলেন নর্থইস্ট ইউনাইটেডের গোলকিপার গুরমিত সিং। সেই কথাই জানালেন প্রাক্তন গোলরক্ষক ভাষ্কর গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, টাইব্রেকার দিয়ে কোনও গোলকিপারকে বিচার করা যায় না। যাঁদের উপর গোল করার দায়িত্ব থাকে, তাঁরাও ভুল করতে পারেন। টাইব্রেকারে গোলকিপারের সাফল্য নির্ভর করে ওই বিশেষ দিনে তাঁর পারফরম্যান্সের উপর।
[আরও পড়ুন: ডুরান্ড ফাইনালে হার, কলকাতা লিগের খেতাবি লড়াই থেকেও বিদায় মোহনবাগানের]
যেভাবে নকআউটের দুটি ম্যাচ টাইব্রেকারে একাধিক সেভ করেছিলেন বিশাল, এদিন যেন ঠিক সেটারই 'রিপ্লে' হল। পার্থক্য শুধু, ফাইনালে নায়কের নাম গুরমিত। দীর্ঘদিন ধরে নর্থইস্টে রয়েছেন হরিয়ানার গোলকিপার। অথচ সেভাবে প্রচারের আলো পাননি। ডুরান্ড ফাইনালের পর সেটা হয়তো তিনি পাবেন। এদিন কোলাসোর শটের পর মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বোসের শটও সেভ করলেন তিনি। ঠিক কোন জায়গায় আলাদা হয়ে যান গুরমিত? তাঁর একসময়ের সতীর্থ ও বর্ষীয়ান গোলরক্ষক শুভাশিস রায়চৌধুরী ফোনে জানালেন, "গুরমিতের যেটা সবচেয়ে বড় গুণ, সেটা হল শেখার ইচ্ছা। আর ফুটবলটা নিয়ে ভাবে। প্রায়ই এসে পরামর্শ নিত আমার থেকে। কী করলে আরও ভালো করা যায়, সেই খিদেটা আছে।"
[আরও পড়ুন: কোচের ভুল নাকি ক্লান্তি, কোন পাঁচ কারণে ডুরান্ড ফাইনাল হারল মোহনবাগান?]
তা বলে বিশালের কৃতিত্ব কোথাও কমে না। জাতীয় দলের প্রথম গোলকিপার হয়ে ওঠার যে তিনিই প্রথম দাবিদার, সেটা মনে করেন শুভাশিসও। তিনি বললেন, "বিশাল ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যাচ্ছে। আমি জানি না, কেন ও ভারতীয় দলে প্রথম পছন্দ নয়? আমার তো এটা ভেবেই খারাপ লাগে। ও অবশ্যই যোগ্য।" কিন্তু আজকের পারফরম্যান্সের পর কি তাঁকে টক্কর দিতে পারেন গুরমিতও? মাত্র ২৪ বছর বয়স তাঁর। শুভাশিস আশাবাদী। তিনি বলছেন, "কেন পারবে না? ওর মধ্যে প্রতিভা আছে। এভাবে পারফর্ম করে গেলে ওর কাছে জাতীয় দলের দরজা আবার খুলে যাবেই।"