রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: তৃতীয় বছরে নিয়ম রক্ষার পুজো। তাই এবছরের দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) খুব বেশি জাঁকজমক না হওয়ারই কথা ছিল বঙ্গ বিজেপির (BJP)। কিন্তু সেই ভাবনা আচমকাই বদলে ফেলল গেরুয়া ব্রিগেড। রবিবার আইসিসিআরে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের বৈঠকে এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। দলের একাংশের দাবি, বড় করেই পুজো হোক। বিশেষত বাংলার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর কালচারাল হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর এ বিষয়ে একেবারেই উদাসীনতা পছন্দ নয় তাদের। সেই কারণে দলের একাংশের দাবি, অমিত শাহ কিংবা জে পি নাড্ডা এসে সল্টলেকের ইজেডসিসি-তে বিজেপির আয়োজিত দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করুন। সশরীরে না আসতে পারলে অন্তত ভারচুয়ালি তা করুন। এদিন বৈঠকে এই প্রসঙ্গে দুই শিবিরের মতান্তর নিতান্তই ‘ছেলেমানুষি’ বলে মনে করা হচ্ছে।
বঙ্গ বিজেপির উদ্যোগে ২০২০ সাল থেকে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই পুজোর ভারচুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন। এবছর দলের একাংশের মত ছিল, সল্টলেকে ইজেডসিসিতে (EZCC) নমো নমো করে পুজো হোক, জাঁকজমক দরকার নেই। পার্টির উদ্যোগে কোনও পুজোর বিপক্ষে বরাবরই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। কিন্তু এদিনের বৈঠকে দলের আরেক পক্ষ প্রস্তাব দিয়েছে, এবারও বড় করে পুজো হোক কেন্দ্রীয় নেতারা আসুক।
[আরও পড়ুন: চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ভিডিও ফাঁস কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও ১, নিন্দায় সরব সোনু সুদ]
দুর্গাপুজো ঘিরে দলের অন্দরে দু’পক্ষের এই মতবিরোধ থেকেই স্পষ্ট, রাজ্য নেতাদের কারও কোনও জনসংযোগই নেই। এলাকায় ক্লাব বা পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগই কারও নেই। শাসকদলের নেতারা সারা বছর এলাকার মানুষ বা ক্লাব সংগঠনের পাশে থাকে। সমস্ত পুজোর সঙ্গেই শাসকদলের নেতারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু বিজেপি নেতাদের জনসংযোগ (Mass Communication) না থাকায় কোনও পুজোতে তাঁদের সেভাবে আমন্ত্রণও জানানো হয় না। কারও নিজস্ব কোনও পুজো নেই। ফলে একটা ঘেরাটোপে দলের উদ্যোগে পুজো হলে সেখানেই থাকতে চান বিজেপি নেতারা।
[আরও পড়ুন: ‘মৃতপ্রায় মানুষকে বাঁচানোর জন্য টাকা দিয়ে কী ভুল করেছি?’, অনুব্রতকে সমর্থন ব্যবসায়ী রাজীবের]
এসবের মধ্যেই আবার পুজোর সময় মানুষের পাশে থাকার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু জনসংযোগহীন গেরুয়া নেতারা কীভাবে পাশে দাঁড়াবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরে। রবিবারের বৈঠকে সংগঠন মজবুত করার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল থেকে মঙ্গল পাণ্ডে। মঙ্গল পাণ্ডের বক্তব্য, সকলকে নিয়ে চলতে হবে। সকলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সব কর্মীদের কথা শুনতে হবে। দলের নয়া পর্যবেক্ষকের এই বার্তা থেকে স্পষ্ট, দলে কোন্দল নিয়ে বিরক্ত কেন্দ্রীয় নেতারা।