সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'মাতৃরূপেণ সংস্থিতা...', দশভুজা আরাধনার মূল মন্ত্র তো এটাই। নারী মানে মাতৃরূপ। তাই দুর্গাপুজো সব অর্থে মাতৃশক্তির উদযাপন। তবু সমাজে নারীই সবচেয়ে অবহেলিত, আজও। আর এই দিনবদলের দায়িত্ব সাধারণ নাগরিকদের। সাধারণের মধ্যেই যে রয়েছে অসাধারণ কীর্তি স্থাপনের নজির। সেই কাজেই এগিয়ে এসেছেন রাজারহাটের এক আবাসনের বাসিন্দারা। মাতৃশক্তির উদযাপনে অন্য ভাবনা ভেবেছেন তাঁরা। এবছর নিষিদ্ধ পল্লি থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৫ জন 'দুর্গা'কে তাঁরা শামিল করেছেন রাজারহাটের আবাসিকরা।
রাজারহাটের ড্রিম অ্যাপার্টমেন্টের দুর্গাপুজো এবার বিশেষ হয়ে উঠতে চলেছে। সপ্তমীর দিন এখানকার আবাসিকরা নিজেদের পুজোয় শামিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিষিদ্ধ পল্লি থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৫ জন মহিলাকে। শুধু তাই নয়, তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এই নারীবাহিনী অংশ নেবে আবাসনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। আনন্দ কেন্দ্র নামে এক অনাথ আশ্রমের সহযোগিতায় এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা। আসলে এই মহিলারা পাচারচক্রের হাত থেকে উদ্ধার হয়েছেন। কিন্তু তার পর তাঁরা নিজেরাই নিজেদের জীবন গড়ে তুলেছেন, অন্ধকার থেকে নিজেরাই নিজেদের ভরিয়ে গিয়েছেন আলোয়। নানা ধরনের সামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে এখন তাঁরা যুক্ত। খুঁজে নিয়েছেন জীবনের অন্য মানে। আর তাই এই মাতৃরূপী নারীদের এবার পুজোয় শামিল করছেন রাজারহাটের বাসিন্দারা।
ড্রিম অ্যাপার্টমেন্ট পুজো কমিটির তরফে সম্পাদক প্রবাল আঢ্য, অরুন্ধতী বন্দ্যোপাধ্যায়দের বক্তব্য, ''আমরা সবসময় দুর্গোৎসবের আনন্দ তাঁদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চেয়েছি। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। তবে এবার তা হতে চলেছে। মানুষজন তাঁদের সামনাসামনি দেখে কী প্রতিক্রিয়া দেন, তা দেখতে চাই। আর এই অনুষ্ঠানের আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, তাঁদের পরিচয় গোপনই থাকবে। তাঁদের সুরক্ষার স্বার্থে এই কাজে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।'' 'ড্রিম' অ্য়াপার্টমেন্টের আবাসিকরা যে সত্যিই অন্যভাবে স্বপ্ন দেখেন, তা বলাই বাহুল্য।