নব্যেন্দু হাজরা: পুজোর বাকি মাঝে আর কয়েকদিন। কলকাতা থেকে সুদূর জেলা, সর্বত্র চলছে শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রস্তুতি চলছে প্রবাসেও। লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্রাজিল, জার্মানি। প্রবাসী বাঙালিরা সেখানেও দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কোথাও পঞ্জিকা মেনে চারদিনের পুজো। আবার কোথাও বা উইকএন্ডে শনি-রবিতে। অন্যান্য দেশে পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা কানাডায়। খলিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে।
নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতকে দায়ী করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেখানে বসবাসরত ভারতীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে ভারত সরকারের তরফে। কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য এই পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসরত বাঙালি এবং ভারতীয়রা পুজোর আগে অজানা আশঙ্কায় ভুগছেন।
[আরও পড়ুন: কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ২ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড, বেকসুর খালাস ৪]
জানা গিয়েছে, কানাডার গ্রেটার টরন্টোতে ২২টি দুর্গাপুজো হয়। মূলত কর্মসূত্রে সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিরা পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। আগামী ২১ অক্টোবর শনিবার সেখানে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী এবং ২২ তারিখ নবমী এবং দশমীর পুজো। হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খাওয়াদাওয়া। সেখানকার ‘আমার পুজো টরন্টো’ এবার ১২ বছরে পা দিল। কলকাতা থেকে সোমলতা আচার্যর এবার সেখানে অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার কথা। তবে এসবের মধ্যেও আশঙ্কায় ভুগছেন এখানকার বাসিন্দারা। কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা আবারও ঘটবে না তো! সেই ভয়ই তাড়া করছে তাঁদের।
ইতিমধ্যেই পুজো এবং দিওয়ালিতে বিশেষ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন সমস্ত পুজো উদ্যোক্তারা। ‘আমার পুজো টরন্টো’-র এক উদ্যোক্তা জানান, প্রবাসী বাঙালিরা মিলেই এই পুজো। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে যা দু’দিন ধরে হয়। ঠাকুর আসে কুমোরটুলি থেকে। তবে এবছর আসেনি। তিনবছর করে একই দেবীমূর্তি পূজিতা হন। সামনের বছর আবার নতুন প্রতিমা আসবে। অষ্টমীর ভোগ থেকে দশমীতে সিঁদুরখেলা, সবই হয় এখানে। তবে সব কিছুর মাঝেই এবার যেন কিছুটা ভয় কাজ করছে এখানকার বাঙালিদের মধ্যে। কর্মসূত্রে টরন্টোতে থাকেন উৎপল চক্রবর্তী। তাও প্রায় বছর সাতেক ধরে। বলেন, ‘‘প্রতিবার পুজোয় খুব আনন্দ করি এখানে। কলকাতার পুজোর স্বাদ এই সূদুর টরন্টোতে বসেই নিতে হয়। কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনা পরম্পরায় মনের মধ্যে এক অজানা আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।’’