সৈকত মাইতি, তমলুক: রাজতন্ত্র পেরিয়ে গণতন্ত্র চলছে রাষ্ট্র। তবুও অতীতের রাজ ঐতিহ্য মেনে ঢাকে কাঠি পড়ে সুপ্রাচীন তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের দুর্গাপুজোয়। গণেশ চতুর্থীতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর শহর তাম্রলিপ্ত বা তমলুকের এই দুর্গাপুজোর খুঁটিপুজো ঘিরে সাজ সাজ রব রাজবাড়ি জুড়ে। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে বহু প্রাচীন প্রথা মেনে ঐতিহাসিক এই রাজবাড়ির খুঁটিপুজোয় ঢাকের তালে উচ্ছ্বাসে ভাসলেন সকলে।
খসে পড়েছে পলেস্তারা। হারিয়ে গিয়েছে সরগরম রাজসভা কিংবা নাচমহল। ভগ্নস্তুপের মাঝেই স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে কেবল জরাজীর্ণ লাল চুনসুড়কির দেওয়াল। তাও আবার সংস্কারের অভাবে সংকটের মুখে। বহু প্রাচীন তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি কৌলিন্য হারালেও সেই সাবেকিয়ানা বজায় রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। আর তারই নিদর্শন হিসেবে মঙ্গলবার গণেশ চতুর্থীর সকালে তিথি মেনে ঘটা করে অনুষ্ঠিত হল দুর্গাপুজোর খুঁটি পুজোর অনুষ্ঠান। বৃষ্টি দুর্যোগ উপেক্ষা করেই প্রথা অনুযায়ী রীতি মেনেই বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে এদিন সকাল থেকেই শুরু হয় পুজোর তোড়জোড়।
[আরও পড়ুন: এবার হোয়াটসঅ্যাপেও মোদি, জেনে নিন কীভাবে পাবেন প্রধানমন্ত্রীর বার্তা]
মাইকে ভেসে ওঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই দৃঢ় সাবলীল কণ্ঠে মাতৃবন্দনা। মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে রাজবাড়ির খোলা আকাশের নিচে রাজময়দানে নিয়ে আসা হয় কূলদেবতাকে। আদি তাম্রলিপ্ত সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোগে সেখানেই তিথি নক্ষত্র মেনে ঘটা করে চলে পুজো আচার। ঢাকের তালে-তালে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন কচিকাচা থেকে বড় সকলেই।
এরপর দুপুরে ঠাকুরবাড়ির দালানে চলে মহাভোগ, প্রসাদ বিতরণ। যার মুখ্য উদ্যোক্তা ছিলেন তমলুক পুরসভার পুরপ্রধান তথা তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির অন্যতম সদস্য দীপেন্দ্রনারায়ন রায়। তিনি বলেন, “বিগত প্রায় ১৫ ধরে এলাকাবাসীদের নিয়ে সমস্ত রকম রীতি মেনেই এই দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠান এখন সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। সেই উপলক্ষে জগতের মঙ্গল কামনা করে এদিন খুঁটিপুজোর আয়োজন করা হয়েছে।”