সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েকের টানা বৃষ্টিতে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। বীরভূমের কঙ্কালিতলা, তারাপীঠ প্রায় জলের নিচে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হলেও জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বাংলার বিভিন্ন জেলাবাসীর। কারণ, ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার বিষয়টি অব্যাহত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি উড়িয়ে মঙ্গলবার সকালেও জল ছাড়া হয়েছে বলে খবর। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে - দুই জলাধার প্রায় দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়। আর তাতেই নতুন করে প্লাবিত ঝাড়খণ্ড লাগোয়া দুর্গাপুর, আসানসোল। এছাড়া আগে থেকে প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাও নতুন করে জলমগ্ন। তার মধ্য়ে নতুন করে জল ছাড়ায় পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।
ডিভিসি সূত্রে খবর, নিম্নচাপের বৃষ্টির কারণে ডিভিসির মূলত দুটি জলাধার - মাইথন ও পাঞ্চেত ব্যারেজের উপর জলের চাপ বেড়েছে। তাই এই দুই ব্যারেজ থেকে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই জল ছাড়া শুরু হয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। জানান, এভাবে জল ছাড়ায় বাংলায় বিপদ বাড়ছে। রাজ্যকে না জানিয়ে যাতে নতুন করে জল ছাড়া না হয়, সেই বিষয়েও তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন মমতা।
মাইথন থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ল। ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়।
কিন্তু মঙ্গলবার সকালের পরিস্থিতি বলছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কোনও আপত্তি, অনুরোধকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। উপরন্তু মঙ্গলবার সকালে দুই জলাধার থেকে প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক নতুন জল ছাড়ায় এখনও পর্যন্ত তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দেড় লক্ষ কিউসেক। এর মধ্যে মাইথন থেকে প্রায় ১ লক্ষ এবং পাঞ্চেত থেকে প্রায় ৪৯ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই জল দামোদর নদ হয়ে পশ্চিম বর্ধমানের দামোদর ব্যারেজে পৌঁছে সেখানকার জলের চাপ বাড়িয়ে তোলে।
পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বেশি মাত্রায় জল ছাড়া হলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলির খানাকুল, আরামবাগ-সহ দামোদরের তীরবর্তী এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই বহু এলাকা জলের নিচে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি থেমে রোদ উঠলেও পরিস্থিতির তেমন কোনও উন্নতি নেই।