সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুদ্রার পিঠে শ্রীরামের প্রতিকৃতি। আছেন অন্যান্য দেবদেবীও। এ মুদ্রা নাকি সেই ব্রিটিশ আমলের। চালু করেছিল খোদ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। দিনকয় হল সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে এই ছবি ও তথ্য। জাতীয়তাবাদী আবেগে তা শেয়ারও হচ্ছে দেদার। খাস সাহেবরা হিন্দু দেবদেবীদের গুরুত্ব দিয়েছিলেন এ বড় কম কথা নয়। ফলত বহু মানুষই এ তথ্যের মোহে পড়ে মুদ্রার ছবি শেয়ার করছেন।
[ভক্তদের অনুদান গ্রহণের জন্য এবার পুরীর রথে বসছে ‘হান্ডি’]
কিন্তু সত্যিই কি এরকম মুদ্রা আছে?
যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তাতে বলা হচ্ছে মুদ্রাগুলি ১৮১৮ থেকে ১৮৩৯ সালের মধ্যে চালু করা হয়েছিল। এই তথ্য থেকে দুটি সম্ভাবনা উঠে আসছে। একদিকে হিন্দুত্ববোধ জাগরণের পালা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, ব্রিটিশরাও যে হিন্দু ধর্মকে সম্মান করেছিল, কেন স্বাধীনতার পর তা ফিকে হয়ে যাবে? অতএব আরও বেশি করে তা জাগরিত হওয়া উচিত। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, তাহলে কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সেই মুদ্রা প্রচলনের সময় থেকেই বিভাজনের রাজনীতি করে গিয়েছে! যা এতদিন অনেকের অজানাই ছিল। তবে আবেগ যাই বলুক না কেন, যুক্তি কিন্তু বলছে অন্য কথা। দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামের মুখপাত্র পুরাতত্ত্ববিদ সঞ্জীব সিং জানাচ্ছেন, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুদ্রা চালু করেছিল ঠিকই। বিভিন্ন ধাতুর মুদ্রার প্রচলন ছিল। কিন্তু হিন্দু দেবদেবীর প্রতিকৃতি সম্বলিত কোনও মুদ্রার কথা জানা নেই। গোটা বিশ্বের কোথাও এরকম কোনও মুদ্রা আছে বলেও কোনও তথ্য নেই। এমনকী রিজার্ভ ব্যাংকের যে মুদ্রার তালিকা, সেখানেও এই ধরনের মুদ্রার কোনও তালিকা নেই।
তাহলে এই মুদ্রার ছবি এল কোথা থেকে?
অন্য একটি মত থেকে জানা যাচ্ছে, সেই সময় বিদেশি পর্যটকদের বিক্রির জন্য এ ধরনের মুদ্রার চল থাকতে পারে। কিন্তু তা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চালু করা মুদ্রা নয়। কারণ তাদের সব মুদ্রায় কোম্পানির লোগো থাকত। অর্থাৎ এই মুদ্রা যে ভুয়ো ওবং সঙ্গের তথ্যও যে ভুয়ো তা নিয়ে কোনও সন্দেহ প্রায় নেই। তবু তথ্য যাচাই না করেই বহু লোক তা শেয়ার করছেন। সম্প্রতি নেটদুনিয়া ছেয়েছে ভুয়ো খবরে। এটিও সেরকমই একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
[চিনা মাদক পাচারকারীদের জেরা করতে শহরে মার্কিন গোয়েন্দারা]
The post হিন্দু দেব-দেবীর প্রতিকৃতি সম্বলিত মুদ্রা চালু করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও! appeared first on Sangbad Pratidin.