নব্যেন্দু হাজরা: অপেক্ষার অবসান। আগামী মাসেই হয়তো গঙ্গার তলা দিয়ে ছুটবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো (East-West Metro)। তবে যাত্রী নিয়ে নয়, শুরু হবে ট্রায়াল রান।
ইস্ট-ওয়েস্টের পরীক্ষামূলক দৌড়কে কেন্দ্র করে আপাতত মেট্রোর অন্দরে সাজসাজ রব। বস্তুত এ যেন ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া। ট্রায়ালের প্রথমদিন মেট্রোর ছোটার কথা হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড স্টেশন পর্যন্ত, মাঝে পড়বে দুটি স্টেশন-হাওড়া ও মহাকরণ। হাওড়া থেকে ট্রেন ছেড়ে গঙ্গার তলা দিয়ে এসে মহাকরণ স্টেশনে দাঁড়াবে। পরবর্তী স্টেশন এসপ্ল্যানেড। এখানকার কাজ দ্রুত এগোলেও কেএমআরসিএলকে এখনও ভাবাচ্ছে বউবাজারের অংশের কাজ। একটি টানেল বোরিং মেশিনকে তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আরেকটি এখনও কাজ করছে। বাংলা নববর্ষের আগে শিয়ালদহ স্টেশন চালু হয়ে যাওয়ার কথা যাত্রীদের জন্য। আর তা হয়ে গেলেই সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ছুটবে ট্রেন।
[আরও পড়ুন: করোনার দাপট কমতেই দূরপাল্লার ট্রেনে ফিরছে অসংরক্ষিত কামরা, স্বস্তিতে যাত্রীরা]
কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড দু’দিকেই লাইন পাতার কাজ শেষ হয়েছে। দিন দুয়েক আগে মহাকরণ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে তৃতীয় লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজও। আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত লাইনে বিদ্যুৎ দেওয়ার কাজও। আর সেটা হয়ে গেলেই ট্রায়াল রান করার ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যা থাকবে না। হাওড়া ময়দান এবং হাওড়া স্টেশন তৈরির কাজও অনেকটাই শেষ। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এক নয়া ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে কলকাতাবাসী। ইতিমধ্যেই ট্রলি করে মেট্রোর আধিকারিকরা লাইনের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করছেন।
এদিকে দিন চারেক আগে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন পরিদর্শন করে গিয়েছেন দমকলের কর্তারা। এখনও সরকারিভাবে ছাড়পত্রের চিঠি না পাঠালেও কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, ছাড়পত্র আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। আগামী ১৫ মার্চ স্টেশন পরিদর্শনে আসার কথা কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি বা সিআরএসের। তাঁরা ছাড়পত্র দিলেই যাত্রীদের জন্য শিয়ালদহ স্টেশন খুলে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে এশিয়ার মধ্যে হাওড়া মেট্রো স্টেশনটি মাটির সব থেকে নিচে। যার দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার, প্রস্থ ৬৫ মিটার এবং গভীরতা ৩৩ মিটার। এই স্টেশনেরও সত্তর শতাংশ কাজই প্রায় শেষ।
[আরও পড়ুন: WB Civic Polls 2022: রাজ্যের দু’টি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কমিশনের, মঙ্গলবারই ফের ভোটগ্রহণ]
মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য থাকছে ৩৩টি এসক্যালেটর এবং সাতটি লিফট। এ ছাড়াও ২০০ ধাপের চওড়া সিঁড়ি থাকছে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য। নিরাপত্তার কথা ভেবে ১২টি ফায়ার এক্সিটও রাখা হয়েছে স্টেশনে। স্টেশনে থাকছে চারটি প্ল্যাটফর্ম। মহাকরণ স্টেশনের কাজও এগোচ্ছে দ্রুতগতিতে। চলছে প্ল্যাটফর্মের কাজ। এই স্টেশনটি মহাকরণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হবে। কেএমআরসিএলের এমডি মানস সরকার বলেন, “আগামী মাসেই আশা করা হচ্ছে গঙ্গার তলা দিয়ে ইস্ট—ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রায়াল রান শুরু হবে। আপাতত একটি ট্রেনই ছুটবে। কাজ দ্রুত এগোচ্ছে।”