দেব গোস্বামী, বোলপুর: ১৪ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশিতে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত নগদ ৪১ লক্ষ টাকা, ইডি সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি মোবাইল এবং বেশ কিছু জমির দলিলও তদন্তের স্বার্থে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা মন্ত্রীর বাড়িতে কীভাবে এল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, সে সম্পর্কিত সন্তোষজনক তথ্যও নাকি দিতে পারেননি মন্ত্রী। এদিকে, দুর্নীতিতে যোগের কথা অস্বীকার করেছেন চন্দ্রনাথ সিনহা। তবে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন বলেই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকাল পৌনে নটা নাগাদ ইডি আধিকারিকরা বোলপুরে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতর পাড়ায় পৌঁছন। তিনটি গাড়ি করে আসা ইডি আধিকারিকরা এর পর বোলপুরের নিচুপট্টিতে থাকা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়িতে হানা দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকা ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ততক্ষণে খবর পেয়ে জমায়েত হওয়া তৃণমূল কর্মীরা মন্ত্রীর বাড়ি চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন। কিন্তু তাদের রীতিমত লাঠি উঁচিয়ে ধাওয়া করে এলাকাছাড়া করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তখন মন্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না।
[আরও পড়ুন: লাল ট্রলিব্যাগ চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত! চেন খুলতেই বেরিয়ে এল দেহ]
বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী, বোলপুর পুরসভার কাউন্সিলর কুন্তলা সিংহ ও দুই ছেলে শুভজিৎ ও সৌমজিৎ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন ইডি আধিকারিকরা। তখন মন্ত্রী ছিলেন মুরারইয়ের গ্রামের বাড়িতে। ইডির তরফ থেকে তাঁকে সকালেই বাড়ি ফিরে আসতে বলা হয়। মুরারইয়ের গ্রাম থেকে বোলপুর আসতে আড়াই ঘন্টার বেশি সময় লাগা উচিত নয়। কিন্তু মন্ত্রী বাড়িতে এসে পৌঁছন প্রায় পাঁচঘন্টা পর বেলা ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ।
বাড়িতে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি।’’ মুরারই থেকে বোলপুর পৌঁছতে যেখানে আড়াই ঘণ্টা লাগার কথা, সেখানে চন্দ্রনাথের এসে পৌঁছতে পাঁচ ঘণ্টা লাগা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার যোগ থাকার তথ্য উঠে এসেছে। কেন লক্ষ্য চন্দ্রনাথ? ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার কুন্তল ঘোষের কাছে পাওয়া ডায়েরিতে একশো জনের বেশি নাম রয়েছে। তার মধ্যেই রয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার নাম।