shono
Advertisement
Anti-immigration

ভূমি বনাম মেধা, ব্রিটেনে অভিবাসন-বিরোধী বিক্ষোভ

নিজভূমে কোণঠাসা নাকি ব্রিটিশরাই!
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:30 PM Sep 16, 2025Updated: 08:30 PM Sep 16, 2025

অভিবাসন-বিরোধী বিক্ষোভ। সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে তুলছে দক্ষিণপন্থীরা। অভিযোগ– নিজভূমে কোণঠাসা নাকি ব্রিটিশরাই!

Advertisement

অভিবাসন-বিরোধী বিক্ষোভ কেন্দ্র করে উত্তাল ব্রিটেন। লক্ষাধিক মানুষের মিছিল। আন্দোলনের নাম– ‘ইউনাইটেড দ্য কিংডম’ অর্থাৎ রাজত্ব আবার সংগঠিত করো! ঔপনিবেশিক শাসনের দুধ ও তামাক খাওয়ার সুখস্মৃতি বর্তমানে ক্রম অপস্রিয়মাণ। বাস্তবে তা সম্ভবও নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ বীরপুঙ্গবদের একের-পর-এক কলোনি ছেড়ে লেজ গুটিয়ে পালাতে হয়েছিল। হৃতগরিমা পুনরুদ্ধার করা তাদের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি। উল্টে যাদের দীর্ঘ দিন ধরে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক শাসনের রেশ ধরে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেকের গন্তব্য ‘বিলেত’। এবং নিজস্ব যোগ্যতায় তারা অনেকে ব্রিটিশের চেয়েও ‘সুপ্রতিষ্ঠিত’।

সম্ভবত সেটাই ব্রিটেনের বহু মানুষের গাত্রজ্বালার কারণ। তাই উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ইসলামবিরোধী হিসাবে পরিচিত ‘ইংলিশ ডিফেন্স লিগ’ শীর্ষক সংগঠনের অতি দক্ষিণপন্থী নেতা টমি রবিনসন মাঠে নেমেছেন। তঁার দাবি, আগে যে সমস্ত দেশ ইংরেজদের উপনিবেশ ছিল, এখন সেসব দেশের লোকজন অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে লন্ডনের রাস্তায়। আর, দেশের আসল অধিবাসী অর্থাৎ ব্রিটিশরাই নাকি নিজভূমে কোণঠাসা!

এ প্রসঙ্গে চার্লস ডারউইনের ‘যোগ্যতমের উদ্বর্তন’ বা ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ তত্ত্বর কথা মনে পড়তে বাধ্য। যেখানে তিনি বলেছিলেন, পরিবেশের সঙ্গে সবচেয়ে ভালভাবে খাপ খাওয়া বা অভিযোজিত প্রজাতি-ই টিকে থাকে এবং নিজেদের জিন পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। এই ধারণাটি মূলত প্রাকৃতিক নির্বাচনের নীতির একটি অংশ। এই বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুসারে বলতে হয়, ব্রিটিশরা নিজেদের অভিযোজিত করতে পারেনি। কোনও দেশের শাসক এবং বণিক সমাজ নিজেদের শ্রেণি ও জাতির মানুষকে উপেক্ষা করে বিদেশিদের ‘তোল্লা’ দেবে না। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি যদি অন্য হয়– অর্থাৎ মেধা এবং শ্রমের বাজারে গুণগত মান, দক্ষতা ও পরিশ্রমের ক্ষমতায় বিদেশিরা যদি এগিয়ে থাকে– মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কখনও তা উপেক্ষা করতে পারে না।

আবার, বণিকমহলকে চটিয়ে কোনও নীতি গ্রহণ করা কোনও দেশের সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। পুরনো উপনিবেশের বাসিন্দাদের ব্রিটেনে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা থাকলে বুঝে নিতে হবে, স্থানীয় বাজারে ও সমাজে ঘাটতি পূরণ করছে তারা। এবং তা স্বীয় যোগ্যতায়।
কিন্তু সেটা মেনে নেওয়া দক্ষিণপন্থীদের অভিধানে নেই। ভয়, রাগ, ঘৃণা তাদের অস্ত্র। চাকরির নিরাপত্তা নেই, আয়ের নিরাপত্তা নেই। মানুষ অসহায় বোধ করছে। আর সেটা কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায় করছে দক্ষিণপন্থীরা। বিভ্রান্ত করছে।

দেশে-দেশে দক্ষিণপন্থীদের প্রভাব বাড়ছে। কিন্তু তারা ভুলে যাচ্ছে, বর্তমান বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিকরণ রাজনীতি, পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া চলবে না। কোভিড মহামারী পরিস্থিতি তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। উল্টো পথে হেঁটে আসা সাফল্য সাময়িক। কিন্তু সময়ের নিক্তিতে এই নীতি কখনও চিরস্থায়ী হতে পারে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এ প্রসঙ্গে চার্লস ডারউইনের ‘যোগ্যতমের উদ্বর্তন’ বা ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ তত্ত্বর কথা মনে পড়তে বাধ্য।
  • বণিকমহলকে চটিয়ে কোনও নীতি গ্রহণ করা কোনও দেশের সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
  • উল্টো পথে হেঁটে আসা সাফল্য সাময়িক। কিন্তু সময়ের নিক্তিতে এই নীতি কখনও চিরস্থায়ী হতে পারে না।
Advertisement