shono
Advertisement
Arms Laws

বন্ডি বিচে গুলি চালানোয় মৃত ১৫, অস্ত্র আইন নিয়ে প্রশ্ন

বন্ডি বিচে হামলা চালায় দুই বন্দুকবাজ সন্ত্রাসী।
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:05 PM Dec 18, 2025Updated: 08:05 PM Dec 18, 2025

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি বিচে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর ফলে মৃত ১৫। অথচ অস্ত্র আইন সেখানে আমেরিকার চেয়ে আঁটসাঁট।

Advertisement

‘সেই সোনালি দিন আর খুব দূরে নয়, যেদিন বাবরি মসজিদের বুনিয়াদে ইট জুড়বে রাওয়ালপিন্ডির একজন সাধারণ সিপাহি, আর পুনঃনির্মিত হওয়ার পরে, সেই মসজিদে প্রথম নমাজ পড়বেন আসিম মুনির’– যিনি কিনা পড়শি পাকিস্তানের ‘চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সেস’। পাকিস্তানের সংসদে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা করেছিলেন পলওয়াশা খান, পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে ‘পিপিপি’-র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এই মন্তব্যে যথেষ্ট বিষ ছিল, বারুদ ছিল।

ভারতের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করার বাতাস ছিল। ভারতের রাজনৈতিক পরিসর থেকে, সাংবিধানিক কাঠামো থেকে গণতন্ত্রের ছোঁয়া লুপ্ত হয়নি। সে-কারণে এই দেশ বারবার একনায়কতন্ত্র ও মেরুকরণের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। এই দেশ বারবার সংখ্যাগুরুর আস্ফালনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৎপর হয়, আর রক্ষা করতে চায় প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবনযাপনের অনিবার্য ও মৌলিক অধিকারসমূহ। বাবরি মসজিদের ক্ষত হয়তো কখনও পুরোপুরি ভরাট হবে না, কিন্তু ভারতের গণতন্ত্র সেই আক্ষেপের ছায়াতলে বিরাজ করতে চায় না, এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশকে। গ্যাসলাইটিং ভুলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কায়েম করার স্বপ্ন দেখে। সেই প্রেক্ষিতে পলওয়াশা খানের কথাটি যথেষ্ট বিপজ্জনক, উসকানিমূলক, মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।

ভারতে সে-সময় প্রতিবাদের তোড় উঠেছিল। আর, মেজর গৌরব আর্যর পাল্টা-বয়ান এত ঝড় তোলে যে, এখনও ইউটিউবে অজস্র শর্ট ভিডিও রয়ে গিয়েছে। পলওয়াশা খানের কাছে মেজর আর্যর প্রশ্ন ছিল– আপনি কি জানেন রাম মন্দির কোথায়– যেখানে বাবরি মসজিদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার দুঃস্বপ্ন বুনছেন? তা উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত। উত্তরপ্রদেশের মানুষরা থ্রেট দিতে অভ্যস্ত, থ্রেট পেতে নয়। তাছাড়া, সেখানে বাচ্চা মায়ের পেট থেকে জন্মায় ‘কাট্টা’ বা বন্দুক হাতে নিয়ে! অর্থাৎ যে-ভুল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রূপে পলওয়াশা খান করেছিলেন, তদনুরূপ ভুল সুবিবেচক নাগরিক রূপে করে বসলেন মেজর গৌরব আর্য।

ভারতীয় গণতন্ত্র অন্যের দেওয়া থ্রেটকে ভয় পায় না এটি যেমন সত্য, তেমনই কাউকে ভয় দেখানোর পন্থায় বিশ্বাসও করে না, তৎ-সহ হিংসাকে প্রশ্রয় দেয় না। ভারতীয় গণতন্ত্রের চোখে তাই মেজর আর্যর বক্তব্যটি সুসার নয়। দেশের কোনও প্রদেশে বাচ্চারা মায়ের পেট থেকে বন্দুক নিয়ে জন্মাচ্ছে– এ কথাটি ভারতের মতো দেশে কেন গ্রাহ্য হবে? গণতন্ত্র তো এখানে বিশৃঙ্খলা ও মিলিটারি অপশক্তির সামনে মাথা নত করেনি।

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র আইনটি উদার হতে পারে, কিন্তু এর শোচনীয় ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকেই। বোধহীন বা প্রতিহিংসায় উন্মাদ মানুষ প্রায় আমেরিকায় গুলি চালিয়ে দেয়, গণহত্যা ঘটায়। তুলনায় অস্ট্রেলিয়া অস্ত্র আইন অনেক বেশ সংহত, নিয়ন্ত্রিত। ১৯৯৬ সালে, গুলিচালনাজনিত একটি গণহত্যায় ৩৫ জন মারা যাওয়ার পরে, অস্ট্রেলিয়া অস্ত্র আইনকে আঁটসাঁট করতে সচেষ্ট হয়েছিল। তাও সম্প্রতি বন্ডি বিচে ১৫ জন মারা গিয়েছেন এলোপাথাড়ি গুলিচালনায়। ‘বিষাদ নদী বয়’।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভারতের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করার বাতাস ছিল।
  • ভারতে সে-সময় প্রতিবাদের তোড় উঠেছিল।
Advertisement