সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় যেমন ভূত চতুর্দশী, পাশ্চাত্যে তেমন হ্যালোইন। মৃতদের মর্তে আগমনের তিথি। ভয় উদযাপনের এই উৎসব নিয়ে এবার বেজায় ভীত চিন। কোনওকালেই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি পছন্দ নয় বেজিংয়ের শাসক নেতাদের। ইউরোপ, আমেরিকার 'আধুনিকতা', 'ব্যক্তি স্বাধীনতা' অচ্ছুৎ কমিউনিস্ট চিনে। অথচ খোদ সাংহাই শহরে হইহই করে পালিত হচ্ছে মার্কিনী কায়দার হ্যালোইন উৎসব! সেখানে চিনা নাগরিকরা প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন সুপারহিরো ব্যাটম্যান, সুপারম্যান সাজছেন। এমন ঘটনায় বেজায় উদ্বিগ্ন কমিউনিস্ট শাসকরা। বিষয়টিকে বিষাক্ত সূঁচ হিসেবে দেখছে তারা, যা ফাল হয়ে বেরোতেই পারে। কীভাবে?
চিনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের অভাব নেই। সরকারি তথ্য হল সংখ্যাটা প্রায় ৫ কোটি। তাঁরা নিজেদের মতো করে হ্যালোইন উৎসব পালন করতেন আগেও। যা নিয়ে বিন্দুমাত্র হেলদোল ছিল না শাসকের। কারণ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রপ্রধানদের ফরমান অনুযায়ী ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের থেকে দূরে থাকত আম আদমি। ব্যবহার করত সরকারি নজরদারিতে থাকা চিনা সোশাল মিডিয়া। বাকি বিশ্ব থেকে আড়াল করা সেই চিনের প্রাচীর (কংক্রিটের ঐতিহাসিক প্রাচীর নয়) ভাঙতে শুরু করেছে... আশঙ্কা শাসক দলের নেতাদের একাংশের।
গত বছরই সাংহাইয়ের হ্যালোইন উদযাপন শিরোনাম হয়েছিল গোটা পৃথিবীর মিডিয়াগুলোতে। সিঁদুরে মেঘ দেখেছিল বেজিং। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সাংহাই শহরের এবারের এক ভিডিও। সেখানে দেখা গিয়েছে, শহরের রেস্তরাঁ, বার ভর্তি জমজমাট এলাকায় মার্কিনি ধাঁচে হ্যালোইনে মেতে উঠেছেন সাধারণ নাগরিকেরা। কেউ ব্যাটম্যান, কেউ সুপারম্যান সেজেছেন। এমনকী নকল ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও চিনের ব্যস্ত শহরের পথে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। উৎসবের ভিড়ে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। কোভিড মহামারী পরবর্তী চিনের এই পরিবর্তনেই আশঙ্কিত শি জিনপিং সরকার।
কে না জানে আর্থিক বিশ্বযুদ্ধের এরিনায় দুই সুপারপাওয়ার হল চিন ও আমেরিকা। দেশে সেই 'শত্রু'র প্রভাব পড়ছে ড্রাগনের চোখ এড়িয়ে! এমন ঘটনায় আশঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে বলেই মনে করছে বেজিং। এরপর যদি মার্কিন ঢঙের আধুনিকতা, ব্যক্তি স্বাধীনতার দাবি তোলে মানুষ, শাসকের জো হুজুর নীতি আর মানতে না চায় জনতা! তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার পুনারবৃত্তি হবে না তো! মার্কিনী ভূত চতুর্দশী হ্যালোইনে বাস্তবেই ভীত চিন। 'তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ভূত' দেখছে একনায়ক শাসকেরা।