সম্প্রতি এলন মাস্কের কুনজরে পড়েছে বাংলা ভাষা। পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল টিউব স্টেশনে বাংলার অস্তিত্ব নিয়ে তিনি বিরক্ত। এবার দেখা যাক ব্রিটিশ সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় রবীন্দ্রনাথের ভাষার বিরুদ্ধে!
বর্তমানে পৃথিবীর ধনীতম মানুষটির নাম এলন মাস্ক। শুধু তিনি টপকাতে পারেননি দু’টি অন্তহীন অভাব। এক, আমেরিকান হয়েও তিনি ‘সেন্ট পার্সেন্ট’ আমেরিকান নন, মানে ততটা আমেরিকান নন যাতে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। এই স্বপ্ন তিনি তঁার সমস্ত দৌলত ঢেলেও সম্ভব করতে পারবেন না। তঁার স্বপ্নপূরণের পথের কঁাটা এই নির্মম সত্য যে, তিনি আমেরিকায় জন্মানো আমেরিকান নন। সুতরাং, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার নির্বাচনে দঁাড়ানোর অধিকার তঁার নেই।
এবং এই অভাবের দুঃসহ দুঃখ তঁাকে সহ্য করতে হবে বাকি জীবন। দ্বিতীয়, যে-অভাবটিও তিনি এ জীবনে টপকাতে পারবেন না কোনও দিন, সেটি হল তিতিক্ষার অভাব। তঁার মনের গঠনে নেই সহিষ্ণুতা। মনের মাটিতে নেই ক্ষমা। একটির পর একটি বিয়ে করেছেন। কিন্তু কোনও স্ত্রীকেই সহনীয় মনে হয়নি। অনেক স্ত্রী তো আবার তঁাকে ‘শয়তান’ বলতেও পিছপা হননি, তঁার বিপুল কুবের খ্যাতি, ক্ষমতা, প্রতিপত্তিকে ভয় না-পেয়ে। বিবাহজাত ও বহির্ভূত সবমিলিয়ে ১২টি সন্তান। এদের মধ্যে একজন কন্যা হয়ে জন্মে ২০২২ সালে লিঙ্গ বদলে বাপের পরিচয় সম্পূর্ণ মুছে নতুন পরিচয় নিয়েছে– ভিভিয়ান উইলসন! অন্য সন্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক না থাকলেও এই মার্কিন ধনকুবের সবচেয়ে কনিষ্ঠ পুত্রটিকে ‘জিনিয়াস’ ভাবেন, কঁাধে চাপিয়ে তাকে নিয়ে যান মিটিংয়ে, ইটিংয়ে, নানা বাণিজ্য ফিটিংয়ে। সেই জিনিয়াস পুত্রের নাম রেখেছেন ইলন ‘XAE-XII’. পুত্রের ‘আইকিউ’-এর পরিচয় পেয়ে মাস্ক তঁাকে রোবট হিসাবে বড় করতে চান! অর্থাৎ, ইলন মাস্ক মানুষ সহ্য করতে পারেন না। মানুষকে ক্ষমা করতেও পারেন না। তঁার সংস্থায় যঁারা চাকরি করেন, তঁারাও আজ আছেন তো কাল নেই, এতই জঁাদরেল ‘বস’।
এহেন কুবের পৃথিবীটাকেও সহনীয় মনে করছেন না আর। চারপাশের মানুষকেও আর সহ্য করা যাচ্ছে না। তাই কিছু প্রিয় নারী-পুরুষ নিয়ে মাস্ক নিজের তৈরি রকেট চেপে মঙ্গল গ্রহে গিয়ে সেখানে মনের মতো মানুষ বানিয়ে তাদের শাসক ও পালক হয়ে বসতে চান।
সম্প্রতি তঁার কুনজরে পড়েছে বাংলা ভাষা। সরকারি সিদ্ধান্তে ২০২২ সালে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল টিউব স্টেশনের প্রবেশপথে বাংলা ভাষায় লেখা হয় নামটি। কেন না লন্ডনের ওই অঞ্চলে বহু বাঙালির বাস। কিন্তু সম্প্রতি বাংলা অক্ষরে লেখা ওই নাম ব্রিটিশ সাংসদ রুপার্ট লোয়ের অহংকে আঘাত করে। তিনি ওই লেখার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন– এটা লন্ডন, এখানে ইংরেজি, শুধুমাত্র ইংরেজির স্থান। হোয়াই বেঙ্গলি? আমেরিকায় বসে ব্যাপারটা সহ্য করতে পারেননি মাস্কও। এবং অতি ডানপন্থী রুপার্টের সমর্থনে ‘ইয়েস’ টুইট করছেন। আর অমনি ভুবনজুড়ে ধনীর দল ধিক্কার দিতে শুরু করেছে বাংলা ভাষার এই স্পর্ধাকে। এবার দেখা যাক ব্রিটিশ সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় রবীন্দ্রনাথের ভাষার বিরুদ্ধে!