shono
Advertisement
Power Politics

‘বুলি’ ও গুলি, বিশ্বজুড়ে রাজনীতির দুই স্টিয়ারিং!

সর্বযুগে দাদা ও দাদাগিরির একই চেহারা।
Published By: Kishore GhoshPosted: 03:46 PM Jul 02, 2025Updated: 03:48 PM Jul 02, 2025

বিশ্বজুড়ে রাজনীতির এই দুই স্টিয়ারিংয়ে ভর করে সর্বযুগে ‘দাদা’ ও ‘দাদাগিরি’-র চেহারা একইরকম– এরা স্বভাবতই ধমকবাজ।

Advertisement

দাদাগিরি অনেকটা আরশোলার মতো। প্রাগৈতিহাসিক। পৃথিবীর আদিমতম, প্রবলতম, প্রাণীদের অন‌্যতম ডাইনোসরের মতো লুপ্ত হয়ে যেতে পারত আরশোলা। কিন্তু চকচকে, খয়েরি রঙের, লম্বা-উড়ানে অপারগ এই পতঙ্গ এখনও পৃথিবীজুড়ে বিরাজ করছে। এবং যুগ-যুগ পেরিয়ে এসেও আরশোলা নাকি স্বভাব-চরিত্রে, চেহারা, শুঁড় ও ডানার আপাত সীমিত ব‌্যবহারে বিবর্তিত হয়নি। যুগে যুগে হুবহু ‘দাদা’ ও ‘দাদাগিরি’-র মতো।

সর্বযুগে দাদা ও দাদাগিরির একই চেহারা। স্বভাব ও চেহারাটা এইরকম: এরা স্বভাবতই ধমকবাজ। বুঝতে পারে সেই সব মানুষকে– যারা এদের ধমকে চমকাবে, থমকাবে, নত হবে, ভয় পাবে, বাধ‌্য হবে। ধমকবাজি দাদাগিরির বিশেষ অঙ্গ। কিন্তু ধমক যেখানে তেমন কাজ করছে না, সেখানে দাদাগিরির পরের পদক্ষেপ: জবরদস্তি। অর্থাৎ, আক্ষরিক অর্থে বলপ্রয়োগ। একার শক্তিতে কুলবে না। সুতরাং ধমকবাজির সঙ্গে চাই দলবাজি। দাদা একলা থাকে না। দাদাকে ঘিরে থাকে সমভাবাপন্ন সমর্থকের দল। যূথবর্জিত দাদাগিরি অসম্ভব।

দাদাগিরির চূড়ান্ত পর্ব যে কোথায় কোন ভয়ংকর শীর্ষ পর্যন্ত যেতে পারে, তা বোঝা যায় এই সময়ের পৃথিবীতে দুই দাদা চূড়ামণির কার্যকলাপ ও জীবনপ্রবাহের পানে তাকালে। এরা ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেছেন। একজন আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন‌্যজন রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন। তবে যেসব দাদা ছড়ি ঘোরানোর ওই পর্যায়ে পৌঁছতে পারে না, তারা তুলনায় ছোট-ছোট পরিসরে পরোয়াহীন মস্তানি, গুন্ডামিতে দাদাগিরির চূড়ান্ত রূপ দেখাতে অবশ‌্যই পারে। দাদাগিরি কিন্তু সবসময়ে নিন্দনীয় নয়। যাদের স্বভাবের মধে‌্য ধমকবাজি থেকে জবরদস্তি থেকে বলপ্রয়োগ থেকে মস্তানি-গুন্ডামি এসব সহজে আসে, আমেরিকায় তাদেরই বলে ‘বুলি’ (bully)।

এই বুলিরাই স্কুল-কলেজে র‌্যাগিং করে। এবং তাদের মস্তানিকে প্রশংসা করে আমেরিকায় গড়ে উঠেছে ‘বুলি কালচার’। আবার ইউরোপে যে ‘দাদাগিরি’ বা ‘বুলি সংস্কৃতি’ নেই, তা তো নয়। ইতালিকে ইউরোপীয় মস্তান-কালচারের পীঠস্থান বলা হয়। যঁারা মারিও পুজোর বিখ‌্যাত উপন‌্যাস ‘দ‌্য গডফাদার’ পড়েছেন কিংবা সেই উপন‌্যাস অবলম্বনে তৈরি মার্লন ব্র‌্যান্ডো-অভিনীত, ফ্রান্সিস কোপোলা পরিচালিত ‘গডফাদার ছবিটা দেখেছেন, তঁারা অবশ‌্যই বুঝেছেন দাদাগিরি ইতালিতে কী ভয়ংকর রূপে বিরাজ করে সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতির ক্ষেত্রে। যারা এই ধরনের দাদাগিরি করে, ‘বুলিবয়’ বলে খ‌্যাত হয় তারা এবং রাজনীতির সঙ্গে জড়ায়।

মার্কিন ইংরেজিতে ‘bully’ শব্দটি ‘চমৎকার’ অর্থেও ব‌্যবহার হয়, যেমন ‘হোয়াট আ বুলি এক্সপ্রেশন!’ ‘বুলিবয়’ হল সে-ই মানুষ যে নিজের ক্ষমতা, প্রভাব, মুখের জোর, শরীরের জোর এবং মস্তানির জোর প্রয়োগ করে কাজ হাসিল করতে পারে এবং জুলুম করে টাকা আদায় করতেও পারে। পৃথিবীজুড়ে এই দাদা বা বুলিবয়ের প্রভাব ও প্রতিপত্তি বাড়ছে। কেননা, এদের ছাড়া এ যুগের রাজনীতি সম্ভবত খোঁড়া। ‘বুলি’ এবং গুলি এখন বিশ্বজুড়ে রাজনীতির স্টিয়ারিং।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এই বুলিরাই স্কুল-কলেজে ব়্যাগিং করে।
  • মার্কিন ইংরেজিতে ‘bully’ শব্দটি ‘চমৎকার’ অর্থেও ব্যবহার হয়, যেমন ‘হোয়াট আ বুলি এক্সপ্রেশন!’
Advertisement