shono
Advertisement
Bihar

বিহারে মাতৃদুগ্ধে ইউরেনিয়াম, কুম্ভকর্ণ প্রশাসন!

এর আগে বিহারে মাতৃদুগ্ধে সীসা, আর্সেনিকের মতো পদার্থও মিলেছে।
Published By: Kishore GhoshPosted: 09:25 PM Nov 24, 2025Updated: 09:32 PM Nov 24, 2025

বিহারের ছ’টি জেলায় স্তন্যদানকারী মায়ের দুধে ইউরেনিয়াম মিলেছে! দীর্ঘমেয়াদে তা পানে শিশুদের ক্যানসারের ঝুঁকি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Advertisement

মাতৃদুগ্ধকে ‘অমৃতসম’ বলা হয়। কারণ, নবজাতক থেকে শুরু করে একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত শিশুর প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি সরবরাহ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় মাতৃদুগ্ধ। শিশুর বিকাশে সাহায্য করে, বিভিন্ন সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে। সর্বোপরি স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে মা ও শিশুর মধ্যে একটি গভীর মানসিক বন্ধন তৈরি হয়।

কিন্তু সেই দুধই যদি বিষাক্ত হয়, মা যশোদার বদলে পুতনা রাক্ষসীর মতো দুগ্ধপান করে শিশুর ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়, কৃষ্ণর মতো নিজেদের রক্ষার ক্ষমতা তো কোনও বাচ্চারই থাকে না! তাহলে পরিণতি তো ভয়ংকর হতেই পারে।

বিহারের ছ’টি জেলায় স্তন্যদানকারী মায়ের দুধে ইউরেনিয়াম পাওয়া গিয়েছে! সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা এমনই তথ্য জানিয়েছে। ১৭ থেকে ৩৫ বছর বয়সি মোট ৪০ জন মহিলার স্তন্যদুগ্ধের নমুনা পরীক্ষা করে গবেষকরা জানান, ১০০ শতাংশ নমুনাতেই ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। যদিও গবেষকদের দাবি, এই উপস্থিতি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করার মতো মাত্রায় নয়। ভোজপুর, সমস্তিপুর, বেগুসরাই, খাগড়িয়া, কাটিহার এবং নালন্দা জেলায় গবেষণা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, স্তন্যদুগ্ধে ইউরেনিয়ামের কোনও বিশ্বস্বীকৃত অনুমোদিত সীমা নেই। তবে যে মাত্রায় ইউরেনিয়াম মিলেছে, তাতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি ‘খুব কম’। ইউরেনিয়ামের রাসায়নিক প্রকৃতির কারণে এটি শরীরে মূলত হাড় ও কিডনিতে জমা হয়, দুধে নয়। কিন্তু তার পরেও রিপোর্টে বলা হয়েছে, এর উপস্থিতি শিশুদের স্নায়বিক বিকাশ, বুদ্ধিবৃত্তি কমে যাওয়া বা আচরণগত সমস্যার দিকে ঠেলে দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এর আগে বিহারে মহিলাদের বুকের দুধে সীসা, আর্সেনিকের মতো পদার্থও মিলেছে।

হতে পারে এসব অঞ্চলের মাটিতে এই ধাতুগুলোর পরিমাণ বেশি, যা ভূগর্ভস্থ জলে মিশছে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে চাষের জন্য যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তা থেকে খাবারের মাধ্যমে শরীরে ঢুকতে পারে ইউরেনিয়াম, সীসা, আর্সেনিক। এছাড়া কিছু আয়ুর্বেদিক ওষুধ, রং মেশানো হলুদ, প্রসাধন সামগ্রী থেকেও দেহে ক্ষতিকর ধাতু ঢুকতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা।

কারণ একাধিক থাকতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন অন্যত্র। এই ধরনের ঘটনা রুখতে সরকার-প্রশাসন কী করছে? কুম্ভকর্ণর মতো নিদ্রায় গিয়েছে? শিশুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মারাত্মক সংকট তৈরি করতে পারে। বাদ যাবে না অন্য সাধারণ মানুষও। ভারতের মতো দেশে এমনিতেই সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কম। অনেক মানুষ সচেতন নন। খাবার ভাল করে রান্না করা, হাত-মুখ পরিচ্ছন্ন রাখার অভ্যাস সকলের তাকে না। তার উপর যদি খাবারের মাধ্যমে বা অন্য উপায়ে ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে ঢোকে, তাহলে ফল হবে মারাত্মক। সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে দৃষ্টি না দিলে ভবিষ্যতে চরম সংকট তৈরি হতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা এমনই তথ্য জানিয়েছে।
  • এই ধরনের ঘটনা রুখতে সরকার-প্রশাসন কী করছে?
Advertisement