shono
Advertisement
Nepal

নেপালের ‘যুবকম্প’ কি রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রপন্থী শক্তির হাতই মজবুত করবে?

নেপালও বাংলাদেশের পথেই হাঁটবে?
Published By: Biswadip DeyPosted: 11:27 AM Sep 13, 2025Updated: 11:30 AM Sep 13, 2025

শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশেকে অনুসরণ করে নেপালে হওয়া সাম্প্রতিক ‘যুবকম্প’ কি আদতে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রপন্থী শক্তির হাতই মজবুত করবে? সুশীলার আড়ালে কি তারা-ই ক্ষমতার কলকাঠি নাড়াবে? অাপাতত এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

Advertisement

অামাদের প্রতিবেশী দেশগুলিতে ‘অাঠারোর স্পর্ধা’ অার শুধু কবিতার লাইনে সীমাবদ্ধ নেই। অামরা যখন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যর জন্মশতবর্ষ পালন করছি– তখন শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের রাজপথে অাঠারোর জয়ধ্বনি ঘোষিত হচ্ছে। নেপালে ‘জেন জি’-র বিপ্লবের পর এশিয়া মহাদেশের জন‌্য অারও একটি শব্দবন্ধ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধে‌্য জনপ্রিয়তা পেয়েছে: ‘যুবকম্প’। ২০২২-এ শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে প্রথম যুবকম্পে গদি হারান। গত বছর বাংলাদেশে যুবকম্পের অভিঘাত প্রত‌্যক্ষ করা গিয়েছে। সর্বশেষ নেপাল দেখল যুবকম্পের শক্তি।

নেপালিদের কাছে ভূমিকম্প পরিচিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তবে জেন জি-র নেতৃত্বে সাম্প্রতিক ‘যুবকম্প’ মনে হয় অতীতের ভূমিকম্পগুলির চেয়ে কম নয়। মাত্র দু’দিনের জেন জি বিক্ষোভে যেভাবে কাঠমান্ডুর মতো বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রের একটি উজ্জ্বল বিন্দু সম্পূর্ণ ছারখার হল, তা যুবকম্পের ধাক্কাকে টের পাইয়ে দিচ্ছে।

নেপালের যুবকম্পের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে তুলনা টানা হচ্ছে বাংলাদেশের হাসিনা-বিরোধী ছাত্র-যুব বিক্ষোভের। শ্রীলঙ্কায় যুব বিক্ষোভে রাজাপক্ষে দেশ ছাড়তে বাধ‌্য হলেও রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতাচু‌্যত হয়নি। সংসদীয় ব‌্যবস্থার মধে‌্য থেকেই নতুন সরকার ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু নেপালে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের মতোই ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়েছিল অরাজনৈতিক শক্তির হাতে। বাংলাদেশের ছাত্র-যুবরা রাজনীতির বৃত্তের বাইরে থেকে মুহাম্মদ ইউনূসকে কুর্সিতে বসিয়েছে। নেপালেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। জেন জি-র পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে সেনার তত্ত্বাবধানে নতুন অরাজনৈতিক সরকার গঠিত হচ্ছে। সেখানেও কুর্সিতে বসতে চলেছেন এমন এক ব‌্যক্তি যঁার কোনও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। নির্বাচিত সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষিত হয়েছে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকিকে অন্তর্বর্তী সরকারের মাথায় বসাতে এমনকী সংবিধানকেও অকেজো করে রাখা হচ্ছে।

রাজনৈতিক সমাজের বাইরে নাগরিক সমাজের অভিজাতদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশে এর পরিণাম এখনও পর্যন্ত ভালো হয়েছে তা বলার সুযোগ নেই। সংগঠিত কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা না-থাকলে মতাদর্শহীন একটি শক্তি রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে। সেই রাষ্ট্রের সামনে রূপায়িত করার মতো সুনির্দিষ্ট কোনও কর্মসূচি থাকে না। বাংলাদেশে ঠিক এই পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছে। সুযোগ নিচ্ছে জামাতের মতো মৌলবাদী শক্তি। তারা তাদের ধর্মীয় মতাদর্শ সরকারের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। নেপালের ক্ষেত্রেও কি একই জিনিস ঘটবে? নেপালে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রপন্থী শক্তি এই সুযোগকে ব‌্যবহার করতে সক্রিয় রয়েছে। সুশীলার অাড়ালে কি তারা-ই ক্ষমতার কলকাঠি নাড়াবে? আপাতত এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে এখনই বলা যায় যে, নেপালও বাংলাদেশের পথেই হঁাটবে। দুর্নীতি, বেকারত্বের কোনও সুরাহা হবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশেকে অনুসরণ করে নেপালে হওয়া সাম্প্রতিক ‘যুবকম্প’ কি আদতে রাজতন্ত্র ও হিন্দুরাষ্ট্রপন্থী শক্তির হাতই মজবুত করবে?
  • সুশীলার আড়ালে কি তারা-ই ক্ষমতার কলকাঠি নাড়াবে?
  • আপাতত এই প্রশ্নটিই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
Advertisement