shono
Advertisement

Breaking News

Popular Film

ভারতীয় মূলধারার জনপ্রিয় ফিল্মে প্রেম কেন সম্মতির পরোয়া করে না?

‘স্টক’ করা ও ‘অ্যাপ্রোচ’ করার তফাতটি মেঘে ঢাকা তারার মতো ঘোলাটে।
Published By: Biswadip DeyPosted: 02:54 PM Aug 04, 2025Updated: 02:54 PM Aug 04, 2025

সিনেমা যদি ‘লোকশিক্ষে’ ঘটায়, তাহলে বলতে হবে, ভারতীয় মূলধারার জনপ্রিয় ফিল্মে প্রেম কখনও সম্মতির পরোয়া করে না। কেন?

Advertisement

সাফল্য সবসময়ই বিতর্কগর্ভী। ‘অ্যানিম্যাল’ সিনেমার দুরন্ত বক্স অফিসের সুবাদে পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা যখন সমাদরে আপ্লুত, তখন এ সিনেমার বিরুদ্ধে হিংসার আধিক্য ও নারীবিদ্বেষী উপাদানের বাহুল্যের অভিযোগ উঠেছিল। নারীর প্রতি প্রেম নিবেদনের অতি পুরুষালি ভঙ্গিটিও চলে এসেছিল সমীক্ষার সার্চলাইটে। ‘ভায়োলেন্ট’ এবং ‘মিসোজিনিস্টিক কনটেন্ট’ নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন কিরণ রাও, যিনি পরে বানান ‘লাপাতা লেডিজ’। সেই সময় সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা-ও চুপ করে থাকেননি।

‘দৈনিক ভাস্কর’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাল্টা একহাত নিয়েছিলেন কিরণ রাওকে। তঁার মতে, বেশিরভাগ মানুষই ‘স্টকিং’ ও ‘অ্যাপ্রোচিং’-এর তফাত বোঝে না, ফলে অকারণ মন্তব্য করে বসেন। সে-প্রসঙ্গে সন্দীপ টানেন আমির খানের সুপারহিট ‘দিল’ সিনেমার কথা। ‘খাম্বে জ্যায়সি খাড়ি হ্যায়’ গানটি নিয়ে বলেন: ‘হোয়াট ওয়াজ দ্যাট? ওই গানে কি নায়িকাকে খুব সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে? আমির কার্যত ধর্ষণ করতে গিয়েছিলেন নায়িকাকে (অবশ্যই চিত্রনাট্যের দাবিতে)। যে-ধরনের নিগ্রহ করা হয়েছিল নায়িকার (মাধুরী দীক্ষিত) উপর, তা করার উদ্দেশ্য: তাকে এটা বুঝিয়ে দেওয়া যে, সে ভুল করেছে। অথচ, তারপরে নায়ক-নায়িকা পরস্পরের প্রতি প্রেমে পড়ে যায়। এটাকে কী বলবেন?’

এমন গানের সঙ্গে সংলিপ্ত থাকার জন্য পরে আমির খান ক্ষমা চাইলেও, এ-কথা অস্বীকার করার জো নেই যে, ভারতীয় মূ্লধারার হিন্দি সিনেমায় পছন্দের নারীকে ‘স্টক’ করা ও ‘অ্যাপ্রোচ’ করার তফাতটি মেঘে ঢাকা তারার মতো ঘোলাটে, অনুজ্জ্বল, সেহেতু বিস্তর বিভ্রান্তির জন্মদাতা। ‘টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া’-য় সম্প্রতি শ্রুতি সোনাল একটি তথ্যনিষ্ঠ নিবন্ধে (শিরোনাম: ‘শাম্মি সংস টু শ্রীভল্লি, ইন্ডিয়ান িসনেমা হ্যাজ আ কনসেন্ট প্রবলেম’) দেখিয়েছেন যে, মেয়েদের ‘না’ মানে যে ‘না’, তা সিংহভাগ ক্ষেত্রে পাত্তা পায়নি, বরং ভাবা হয়েছে– ‘না’ মানেই ‘হ্যঁা’।

যেনতেনপ্রকারে মেয়েদের ‘না’-কে ‘হ্যঁা’ করাতে হবে। যে যত অধ্যবসায় সহযোগে তা করতে পারবে, যে তা করতে পারবে যত বেশি চমক ও ঠমক দিয়ে, সে-ই পুরুষ গণ্য হবে তত প্রেমিকপ্রবর বলে। সেজন্য ‘ডর’ দেখে জনতার শাহরুখ খানের প্রতি অকুণ্ঠ অনুরাগ ঝরে পড়তে কখনও সমস্যা হয়নি। এমনকী, মেয়েদেরও তা ভাল লেগেছিল। শ্রুতি উল্লেখ করেছেন ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস’-এর করা একটি রিপোর্টের, যেখানে ৩৫টি ফিল্ম থেকে একগুচ্ছ চরিত্রকে বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়, বাণিজ্যসফল সিনেমায় ‘স্টক’ করা একটি ‘কমন’ ধারা। অথচ এর মাধ্যমে যে ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট’ বা ‘যৌন হেনস্তা’-র পথ প্রশস্ত হয়, তা কে তলিয়ে দেখছে?

ধনুষ-খ্যাত ‘রঞ্ঝনা’-র রি-রিলিজ ঘটেছে সদ্য। সেখানে ‘এআই’-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সিনেমার প্রেমকে ইতিবাচক করে তোলা হয়েছে। এমন কি করা যায়? এ প্রশ্নের পাশাপাশি উঠেছে এহেন জিজ্ঞাসাও: কুন্দন কি বাস্তবেই রোম্যান্টিক পুরুষ? ‘কনসেন্ট’ বা ‘সম্মতি’ ছাড়া প্রেম দ্বিপাক্ষিক হয় না। অথচ গোড়াতেই যে গলদ!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সিনেমা যদি ‘লোকশিক্ষে’ ঘটায়, তাহলে বলতে হবে, ভারতীয় মূলধারার জনপ্রিয় ফিল্মে প্রেম কখনও সম্মতির পরোয়া করে না।
  • ৩৫টি ফিল্ম থেকে একগুচ্ছ চরিত্রকে বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়, বাণিজ্যসফল সিনেমায় ‘স্টক’ করা একটি ‘কমন’ ধারা।
  • অথচ এর মাধ্যমে যে ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট’ বা ‘যৌন হেনস্তা’-র পথ প্রশস্ত হয়, তা কে তলিয়ে দেখছে?
Advertisement