স্টাফ রিপোর্টার: মাছের পর ইটভাটা। ইটভাটার কারবারকে সামনে রেখেও জমি দখলের বিপুল টাকা পাচার করেন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান। ওই ইটভাটার সঙ্গে সংযুক্ত ৬টি ভুয়ো কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণ সংস্থাও তৈরি করা হয়। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের জমি দখল মামলার চার্জশিটে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই কনস্ট্রাকশন সংস্থাগুলির নামও সামনে এনেছে ইডি।
ইডির সূত্র জানিয়েছে, মাছ ও চিংড়ির কারবারকে সামনে রেখেই জমি দখলের বিপুল টাকা পাচার করেছেন শেখ শাহজাহান (Shahjahan Sheikh) ও তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে, ইটভাটার কারবারকে সামনে রেখেও টাকা পাচার করেছেন শাহজাহান। সম্প্রতি, শাহজাহানের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশালের বিশেষ ইডি আদালতে পেশ করা চার্জশিটে ইডি (ED) উল্লেখ করেছে, মাছ-চিংড়ির কারবার ও ইটভাটার কারবারের মাধ্যমে শাহজাহান মোট ৫ কোটি ২১ লক্ষ টাকা পাচার করেছেন। এর মধ্যে ইটভাটার কারবারের মাধ্যমে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা পাচার করা হয়েছে বলে দাবি ইডির। ইডির গোয়েন্দারা জেনেছেন, সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের নিজস্ব ইটভাটা রয়েছে। এ ছাড়াও ওই অঞ্চলের একাধিক ইটভাটা পরিচালনা করতেন তাঁরই ঘনিষ্ঠরা।
[আরও পড়ুন: মাঝ জুনেও বঙ্গে প্রবেশ করেনি বর্ষা! কী বলছে হাওয়া অফিস?]
শাহজাহানের ইটভাটা থেকে বিপুল পরিমাণ ইট বিক্রি হয়েছে বলেও দেখানো হয়। তার জন্য ওই ইটভাটা সংস্থার ভুয়া নথিও শাহজাহান তৈরি করেন। তদন্ত করে ইডি আধিকারিকরা জানতে পারেন, শেখ শাহজাহানের দুই ঘনিষ্ঠ জয়ন্তীর ব্যাঙ্ক অ্যাাকউন্টে ৫০ লক্ষ টাকা ও তনুশ্রীর অ্যাকাউন্টেও ৫০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। চার্জশিটে ইডির দাবি, ওই ১ কোটি টাকা আসলে ইটভাটার সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকেই জমা হয়েছে ওই দুজনের অ্যাকউন্টে। শাহজাহানের ওই ইটভাটার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও আয়কর রিটার্নও ইডি পরীক্ষা করে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে।
ওই ইটভাটার সূত্র ধরেই ইডির (ED) গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, ৬টি কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণ সংস্থার মাধ্যমে হয়েছে ওই টাকা পাচার। এ ছাড়াও শাহজাহানের সঙ্গী শিবু হাজরা নিজের একাধিক নির্মাণ সংস্থার নাম টেন্ডারের জন্য নথিভুক্ত করে। ওই সংস্থাগুলি ভুয়ো বলেই জানা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত শিবু হাজরার একটি সংস্থাই রাস্তা, সেতু, ঘাট নির্মাণ বা পঞ্চায়েতের কাজের জন্য টেন্ডার পেতেন। এদিকে, শাহজাহানের ইটভাটা থেকে যাবতীয় ইট ওই ৬টি ভুয়ো কনস্ট্রাকশন সংস্থা কিনেছে বলেও দেখানো হয়। সেভাবে তৈরি হয় নথিপত্রও। যদিও ওই নথিগুলি ভুয়ো বলেই দাবি ইডির। ওই কনস্ট্রাকশন সংস্থাগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইডি আধিকারিকরা পরীক্ষাও করেন। তাতেই ধরা পড়ে কোটি টাকার কারচুপি। শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগিরের শেখ সুমাইয়া ট্রাস্টের মাধ্যমেও জমি দখলের বিপুল টাকা পাচার হয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি।