সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। বিক্ষোভের জেরে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন। আহত ৪০০-র উপর। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি অব্যাহত। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলিগের সদস্যরা। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পড়ুয়াদের হোস্টেল থেকে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছে আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রীরা।
এদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও মৃত্যুর ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পর এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, "আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি উপর উদ্বেগের সঙ্গে নজর রাখছি। সব মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে। ফলে যেকোনও ধরনের হুমকি বা হিংসা থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাই।"
[আরও পড়ুন: ‘পড়ুয়াদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো রাজাকার’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মন্তব্য জাফর ইকবালের]
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবার তা চরম আকার ধারণ করে। প্রাণ ঝড়ে ৬ জনের। রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুলিতে ও মারধরে জখম হয়েছেন ৪০০-র উপর মানুষ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোথাও শাসকদলের ছাত্রলিগ-যুবলিগ, কোথাও পুলিশ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আন্দোলনকারীরা প্রথমে জানিয়েছিলেন, পবিত্র আশুরার কারণে আজ বুধবার কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। তবে মঙ্গলবার রাতে তাঁরা ঘোষণা করে, বুধবার দুপুরে একাধিক মিছিল বের হবে।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। ঢিবির কবি জসীমউদ্দীন হল, বিজয় একাত্তর হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল-সহ প্রায় সব হলই ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। রোকেয়া হলের এক শিক্ষার্থী জানান, "সকাল থেকে আমার রুম ও পাশের রুম থেকে সব শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন। আমিও চলে যাব। বাড়ি থেকে বাবা-মা অনেক ফোন করছেন। ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক হলে ফিরব।" আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, ছাত্রলিগের সদস্যরা দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে। অস্ত্রধারী বহিরাগতদের নিয়ে আসছে। পুলিশকেও আক্রমণ করছে।