shono
Advertisement

নাতনির পাশে দাঁড়াতে বাড়ি বিক্রি অটোচালকের, এখন অটোই বাসস্থান

মুম্বইয়ের অটোচালকের জীবন-সংগ্রামের কাহিনি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
Posted: 12:40 PM Feb 13, 2021Updated: 12:40 PM Feb 13, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনভর অটো চালান। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। রাত হলে সেই অটোতেই শুয়ে পড়েন। কারণটা খুব সহজ। মুম্বইয়ের (Mumbai) অটোচালক দেসরাজের বাড়ি নেই। নাতনির পড়াশোনার খরচ চালাতে তিনি নিজের বসত বাড়িটিই বেচে দিয়েছেন।

Advertisement

তবে শুধু এক নাতনিই নয়। দুই পুত্রবধূ এবং বাকি নাতি-নাতনিদের দায়িত্বও এসে বর্তেছে বৃদ্ধ দেসরাজের উপর। কারণ তাঁর দুই পুত্রের কেউই বেঁচে নেই। বড় জন ছ’বছর আগে বাড়ি থেকে কাজের জন্য বেরিয়েছিলেন। ফেরেননি। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দু’বছর পর আত্মঘাতী হন ছোট ছেলেও। ফলত, দুই ছেলের স্ত্রী এবং চার নাতি-নাতনির দেখাশোনার ভার এসে পড়ে বৃদ্ধ অটোচালকের উপরই। মুম্বইয়ের খার এলাকায় অটো চালান দেসরাজ। মাসে সব মিলিয়ে অন্তত ১০,০০০ টাকা উপার্জন করেন। এর মধ্যে ৬,০০০ টাকাই চলে যায় নাতি-নাতনিদের পড়াশোনার খরচ চালাতে। বাকি ৪,০০০ টাকায় কোনওক্রমে টেনেটুনে ‘চলত’ সংসার, যার সদস্যসংখ্যা বলতে দেসরাজ নিজে, তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্রবধূ এবং চার জন নাতি-নাতনি।

[আরও পড়ুন: ফুলশয্যার রাতে খাটে বসে স্ত্রী, বর ব্যস্ত কম্পিউটারে! নেটদুনিয়ায় ভাইরাল ছবি]

কিন্তু ‘চলত’ কেন? এখন চলে না? উত্তর হল, না। প্রবল অর্থকষ্টে একবার দেসরাজের বড় নাতনির স্কুল ছাড়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু তখনও তার পাশে ছিলেন হার না মানা এই বৃদ্ধই। উপার্জন বাড়াতে কাজের সময় বাড়িয়ে দেন, অধিকাংশ দিন না খেয়ে দিন কাটিয়ে দিতে থাকেন। কিন্তু সমস্যা বাধে তখন, যখন দ্বাদশের পরীক্ষায় দারুণ ফল করার পর নাতনি দিল্লিতে বি.এড কোর্স করতে যেতে চায়। দেসরাজ জানতেন, সেই সামর্থ্য তাঁর হবে না। তাই বাধ্য হয়ে বাড়ি বেচে দেন। সেই অর্থে পড়তে পাঠান নাতনিকে। পরিবারের বাকি সদস্যকে পাঠিয়ে দেন গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে। আর তার নিজের যাপনের, রাত্রিবাসের জন্য তার বিশ্বস্ত অটোখানি তো আছেই!

নাতনির শিক্ষায় গর্বিত দাদু স্বপ্ন দেখেন, একদিন সে পরিবারের প্রথম স্নাতক হয়ে, স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পেয়ে, তার পাশে দাঁড়াবে, সংসারকে টানবে। সেই সুদিনের আশায় দেসরাজ এখনও ভোর ছ’টায় অটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তাঁর এই হৃদয় স্পর্শ করা জীবনসংগ্রামের কাহিনি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’ ফেসবুক পেজে। তার পর থেকেই তা ভাইরাল। অনেক নেটিজেনই দেসরাজকে আর্থিক সাহায্য করেছেন, আরও অনেকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গুঞ্জন রাত্তি নামে একজন ফেসবুক ইউজার একটি ফান্ড রেইজার চালু করেছিলেন দেসরাজের নামে, যেখানে ইতিমধ্যে ২৭৬ জন ডোনারের তরফে ৫.৩ লক্ষ টাকা উঠে গিয়েছে। পরে টুইটারে দেসরাজের কাহিনি পোস্ট করেন কংগ্রেসের অর্চনা ডালমিয়া। রিটুইট করেন মিলিন্দ দেওরা। এরা দু’জনেই দেসরাজের ফোন নম্বর শেয়ার করে মুম্বইবাসীর কাছে তাঁকে সাহায্য করার আবেদনও জানান।

[আরও পড়ুন: করোনায় ভয় ‘যমরাজে’রও! জনসচেতনতার প্রচারে তিনিও নিলেন ভ্যাকসিন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার