সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভাব নিত্যসঙ্গী, তাই বড় হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। তাই এক কবিরাজের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। সেই মতো অসুস্থ ছেলেকে হাওড়ার নসিবপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নাহ, শেষরক্ষা হল না। বাড়ি ফেরার পথে শিয়ালদহ স্টেশনের মায়ের কোলেই মৃত্যু হল যুবকের। সব বুঝেও ছেলের দেহ আগলে স্টেশনেই বসে রইলেন মা।
[আরও পড়ুন: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র যেন মরণফাঁদ, বাঁকুড়ায় ভেঙে পড়া বাড়িতেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত]
জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীকান্তপুরের বৈদ্যপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম পদ্মা মণ্ডল। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তাঁর ছোট ছেলে মহেশ্বর। গ্রামেই চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। এর মধ্যেই গ্রামের বাসিন্দা গণেশের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁদের। গণেশের কাছেই কবিরাজের হদিশ পান পদ্মাদেবী। এরপরই সন্তানকে নিয়ে কবিরাজের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই বৃদ্ধা। সেই মতোই রবিবার ওই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে গণেশের সঙ্গে হাওড়ার নসিবপুরে নিয়ে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে অসুস্থ হয়ে পড়েন মহেশ্বর। মহিলার সঙ্গী গণেশ জানান, ‘প্ল্যাটফর্মে ঢোকার পরেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন মহেশ্বর। একবার বমিও করেন৷ আর তারপরই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেখানেই সব শেষ।’
শিয়ালদহ স্টেশনে বৃদ্ধাকে ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে যান অনেকেই। কেউ কেউ টাকা গুঁজে দেন মহিলার হাতে। বিষয়টি জানতে পেরেই রেলের চিকিৎসকরা মহেশ্বরকে পরীক্ষা করতে গেলে শেষ আশার ঝলক দেখেন বৃদ্ধা। পরীক্ষার সুবিধার জন্য ছেলের এলিয়ে পড়া মাথাটা কোলে সোজা করে নেন। গুছিয়ে দেন বুকের উপর কুঁচকে পড়ে থাকা গেঞ্জিটা, যাতে স্টেথো প্রাণস্পন্দনের শব্দ ভাল করে শুনতে পায়। কিন্তু নাহ! মহেশ্বর যে অনেক আগেই মা’কে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সব বুঝে স্তব্ধ হয়ে যান বৃদ্ধা। দীর্ঘক্ষণ প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকার পর দেহ পাঠানো হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালের মর্গে। জানা গিয়েছে ময়নাতদন্তের পর দেহ পাঠানো হবে বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: বোমাবাজির প্রতিবাদে অবরোধ উঠতেই ফের অশান্ত কাঁকিনাড়া, রাস্তায় দাপাল দুষ্কৃতীরা]
The post কোলে মৃত ছেলে, শিয়ালদহ স্টেশনে দেহ আগলে বসে রইলেন মা appeared first on Sangbad Pratidin.