সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উমর খালিদকে সমর্থন করে ‘দেশদ্রোহী’, ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা জুটেছিল! কিন্তু তাই বলে থেমে থাকেনি রূপম ইসলামের (Rupam Islam) প্রতিবাদী কণ্ঠ। গানে-গানেই রাষ্ট্র, সমাজ, সিস্টেমের বিরুদ্ধে একাধিকবার আওয়াজ তুলেছেন তিনি। এবার সোনম ওয়াংচুকের (Sonam Wangchuk) হয়ে সুর চড়ালেন বাংলা ‘রক সম্রাট’।
রবিবার নজরুল মঞ্চে যেন আগুন ঝরল রূপম ইসলামের কণ্ঠে। ৫৩তম এককের মঞ্চ। শ্রোতা-অনুরাগীদের মধ্যমণি হয়ে ‘স্বৈরাচারিতা’র বিরুদ্ধে কণ্ঠ ছাড়লেন তিনি। বললেন, “বেশি প্রতিবাদী হলে আমার ফোনে আড়ি পাতা হবে। পিছনে তাড়া করবে ট্রেন্ড ডগ। পালাতে হবে সব ছেড়ে। তবুও এভাবেই জানাব প্রতিবাদ। হায় আদালত! কখনও দুশ্চিন্তা হয়, কোথায় পাব বিচার?” প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন রূপম ইসলাম।
লাদাখের পরিবেশ রক্ষার জন্য, প্রকৃতিকে বাঁচানোর তাগিদে টানা ২১ দিন অনশন চালিয়েছেন বাস্তবের ‘ব়্যাঞ্চো’। সম্প্রতি সেই অনশন ভাঙলেও লড়াই জারি রেখেছেন শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী তথা পরিবেশবিদ। দিন কয়েক আগেই সেই আন্দোলনে শামিল থাকতে কলকাতা থেকে লাদাখে উড়ে গিয়েছিলেন পরিচালক পাভেল। সোশাল মিডিয়ায় সোনম ওয়াংচুকের সমর্থনে সুর চড়িয়ে নেটপাড়ার একাংশের রোষানলে পড়তে হয়েছে অরিজিৎ সিংকেও (Arijit Singh)। এবার বাংলার মঞ্চে গান গাইতে গাইতে সমর্থন জানালেন রূপম ইসলাম।
এদিন এককের অনুষ্ঠানে রূপম ইসলাম যখন নজরুল মঞ্চে গান গাইছেন, তখন নেপথ্যের দৈত্যাকার স্ক্রিনে ভেসে ওঠে লাদাখের প্রতিবাদী মানুষটির মুখ। তৎক্ষণাৎ করতালিতে ভরে ওঠে গোটা অডিটোরিয়াম। এমন প্রতিবাদী দৃশ্য সম্ভবত বর্তমানে গোটা দেশে বিরল। এর আগেও সিরিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অসহায় মানুষদের প্রাণ হারানো নিয়ে গর্জে উঠেছিলেন রূপম ইসলাম। আদতে তিনি এরকমই। গায়ক সত্ত্বার আড়ালে এক আস্ত জীবনদর্শনের পাঠ।
[আরও পড়ুন: রাহুল-আথিয়ার ঘরে সন্তান আসছে! বড় তথ্য ফাঁস করলেন ‘হবু দাদু’ সুনীল শেট্টি]
বাঙালির প্রতিবাদী সত্ত্বা যে এখনও হারায়নি, সেটা বুঝিয়ে দিলেন রূপম-অরিজিৎ, পাভেলরা। রূপমের অনুষ্ঠান থেকে ফিরে পরিচালক পারমিতা মুন্সী সোশাল মিডিয়ায় লিখলেন, “আজ রূপম ইসলাম একক অনুষ্ঠানে ছিলাম, তোর ডাকে। পুরনো বন্ধুদের যে তুই কতটা ভালোবাসিস, তা আমি অভিজ্ঞতা থেকে জানি। আজ নজরুল মঞ্চে, হাউসফুল হলে তুই সোনম ওয়াংচুকে নিয়ে কথা বললি। কেউ তো বলছে না। তুই বললি। আমার জানার মধ্যে তুই প্রথম পাবলিক ফিগার, যে ওনাকে নিয়ে বললি! এর বাইরেও স্পষ্ট করলি নিজের অবস্থান। কোনও রঙ গায়ে না মেখেও যে পপুলার ম্যাজিক তৈরী করা যায়, তার নিদর্শন তুই। তোর গান শুনতে শুনতে আজ মনে হচ্ছিল, কেন আজকের তরুণ প্রজন্মের তোকে নিয়ে এত উন্মাদনা। তুই এই সময়টাকে একদম খপাৎ করে ধরে গান বেঁধেছিস। তাই সময়টাও তোকে মাথায় করে রেখেছে। তুই যে কতখানি স্বতন্ত্র… কতখানি অন্তর থেকে শিল্পী, তা দেখেছি অনেকবার। আজ এই এককের মঞ্চে নিজে সব সংগীত যন্ত্র বাজিয়ে, তুই যা পারফর্ম করলি, তা তুলনাহীন! তোর মতো ব্যক্তিত্বকে গড়পড়তা সিস্টেম ভয় পাবে। আর সেসব গায়ে না মেখে তুই এগিয়ে যাবি, সেটাও জানি। কারণ তুই হলি প্রকৃত রকস্টার! তোর রকবাজিকে কুর্ণিশ জানাই। তুই যে বললি, প্রেম একটা বিপ্লব। ঠিক বললি। প্রেমই আসল বিপ্লব। প্রেম যে ঠিক করে করতে পারে, সে সব করতে পারে। তুই আজীবন এমন প্রেমিক থাক বন্ধু।”